নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারত সীমান্তে কংক্রিটের পাঁচিল তুলছে ভুটান। ঢালাই মেশিন বসিয়ে চলছে দেওয়াল তোলার কাজ। ইট-সিমেন্ট দিয়ে গাঁথা হচ্ছে কংক্রিটের পাঁচিল। আর তা নিয়েই ক্ষোভ ছড়িয়েছে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার জয়গাঁও এলাকায়। ঘটনার জেরে সিল করে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন প্রবেশ পথও। তার জেরে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। সীমান্ত এলাকায় ভুটানের দিকে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পাঁচিল তৈরির কাজ চলছে। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ার সীমান্তে ১২ ফুট উঁচু পাঁচিল তৈরি করছে ভুটান। সীমান্তের ওপারে বানানো হচ্ছে সেপটিক ট্যাঙ্ক। কংক্রিট দিয়ে সিল করে দেওয়া হচ্ছে আলিপুরদুয়ারে ঢোকার একাধিক পথ। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তৃণমূল ও বিজেপি। তবে ঘটনাটি আন্তর্জাতিক বিষয় হওয়ায় তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলাশাসক।
জানা গিয়েছে, যে এলাকায় কংক্রিটের দেওয়াল দেওয়া হচ্ছে সেখানকার ভারতীয় এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা ভূটানে নিত্যদিন কাজ করতে যান। অথচ এই পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই তাঁদের সেই কাজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সরাসরি ধাক্কা পড়েছে তাঁদের রুটিরুজিতে। আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের জয়গাঁও সীমান্তের ওপারেই রয়েছে ভুটানের ফুন্টশোলিং শহরের মূল প্রবেশ দ্বার। পাশাখা-তে রয়েছে পণ্যবাহী গাড়ির প্রবেশপথ। এছাড়াও হাঁটাপথে যাতায়াতের জন্য তিনটি প্রবেশদ্বার রয়েছে। এত দিন ভুটান সীমান্তে কিছু কিছু জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও, বেশিরভাগ এলাকাই ছিল উন্মুক্ত। কিন্তু এখন যেভাবে ভূটান কংক্রিটের পাঁচিল তুলছে তার জেরে আগামী দিনে বাংলার সঙ্গে ভূটানের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার বেশ সম্ভাবনা রয়েছে। ঘটনার জেরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জয়গাঁও উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। তিনি জানিয়েছেন, ‘সীমান্তে ১২ ফুট উঁচু দেওয়াল তুলছে ভুটান। প্রবেশপথ সিল করে দেওয়া হচ্ছে। বন্ধুত্বের সম্পর্কে এটা স্বাভাবিক নয়। আমরা বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে পারছি না। আর এখানে প্রাচীর। এটা ভাল বার্তা নয়। মিত্র দেশের মধ্যে হয় না। ভুটান কী করতে চাইছে আমরা বুঝতে পারছি না। কংক্রিটের ওয়াল দেওয়ায় ভুটান নির্ভর সাধারণ মানুষের রুটিরুজি বন্ধ।’
জয়গাঁওয়ের খোকলাবস্তি এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, শুধুই ১২ ফুট উঁচু পাঁচিল তোলাই নয়, পাঁচিলের ওপারে বিভিন্ন এলাকায় টয়লেটের সেপটিক ট্যাঙ্ক বানাচ্ছে ভূটান। সাধারনত এটা হয় না আন্তর্জাতিক সীমান্তে। আলিপুরদুয়ারের সঙ্গে ভুটানের ৯৮ কিলোমিটার লম্বা সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ওই এলাকায় পাঁচিল তোলা হলে সব থেকে বড় সমস্যা হবে জল নিকাশি ও ধস নামা ঠেকানোর ক্ষেত্রে। ভূটানের এলেকায় ধস নামলে আর জানতেইও পারবেন না এপারের বাসিন্দারা। দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সময়ও হয়তো তাঁরা পাবেন না। এমনই আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের।