নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা নির্বাচনের আগে কার্যত বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) আদি-নব্য দ্বন্দ্ব এবার রাস্তায় নেমে পড়তে চলেছে। কার্যত পুজোর আগে থেকেই বঙ্গ বিজেপিতে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। মুরলীধর সেন লেনের পুরাতন রাজ্য দফতর থেকে সল্টলেকের নয়া রাজ্য দফতর, দুই জায়গাতেই বেনজির বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে। এবার রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে আরও বড়সড় বিক্ষোভের পথে যেতে চলেছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধরা। কার্যত বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar) এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীদের(Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধেই এখন পথে নামার পরিকল্পনা নিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাদের সংগঠন বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ(BJP Bnachao Mancha)। মুরলীধর সেন লেনের পুরাতন রাজ্য দফতর থেকে সল্টলেকের নয়া রাজ্য দফতর, এই দুই জায়গাতেই তাঁরা লাগাতার ধরনা কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। আর এমন দিনে এই কর্মসূচি হওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যেদিন রাজ্যে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক(সংগঠন) বি এল সন্তোষ(B L Santosh)। অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর।
বঙ্গ বিজেপির আদি তথা বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের দাবি, সুকান্ত-শুভেন্দুরা এখন দলের সংগঠনের মাথায় তাঁদের তাঁবেদারদের বসিয়ে দিচ্ছেন। দলের আদি নেতাকর্মীদের কোনঠাসা করে তৃণমূল বা ভিন্ন দল থেকে আসা নেতাদের পদ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ এরা না দলকে নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখাতে পারছেন, না দলের সংগঠন বাড়াতে পারছেন। কেউ কেউ তো আবার সরাসরি অর্থের বিনিময়ে পদ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন সুকান্ত-শুভেন্দু। তাঁরা এই সব অভিযোগকে না গুরুত্ব দিচ্ছেন না ঘটনার সত্যতা স্বীকার করছেন। এই অবস্থায় তাঁদের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে নামতে চলেছে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ। ৩১ তারিখ কলকাতায় আসছেন বি এল সন্তোষ। সেদিনই বিক্ষোভ ও ধরনা কর্মসূচি নিতে চলেছে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ। সন্তোষ কলকাতায় এসে সংগঠনের অবস্থা নিয়ে বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবেন। তারপর আরও একাধিক বৈঠক আছে। কিন্তু তার মাঝেই এই বিক্ষোভ কর্মসূচী সেই সব বৈঠক ভেস্তে দিতে পারে বলেই অনেকে মনে করছেন।
তবে বঙ্গ বিজেপির বিক্ষুব্ধদের দাবি, তাঁদের ক্ষোভ শুধু সুকান্ত বা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নয়। তাঁদের ক্ষোভের মুখে রয়েছেন এই রাজ্যে থাকা দলের সহপর্যবেক্ষক অমিত মালব্য, রাজ্যের সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী, অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়রাও। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, বিক্ষুব্ধ নেতাদের ঠান্ডা করতে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব যেভাবে দলীয়স্তরে বহিষ্কার থেকে শো-কজ করা শুরু করেছে তার বিরুদ্ধেও আওয়াজ তোলা হবে বিক্ষোভ কর্মসূচী থেকে। জানা গিয়েছে, ২৪’র ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির এই ডামাডোল নিয়ে রীতিমত উদ্বিগ্ন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। এই পরিস্থিতিতে কলকাতায় এসে বিক্ষুব্ধদের ঠান্ডা করতে রাজ্য নেতাদের কী পরামর্শ দেন সন্তোষ সেদিকে নজর রয়েছে দলের একাংশের। সন্তোষের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টাও করতে পারেন বিক্ষুব্ধরাও। যদিও সন্তোষ তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।