নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজে সাংসদ। তারপরও দল তাঁকে প্রার্থী করেছিল বিধানসভা নির্বাচনে। তাও তাঁরই খাস তালুকে। তবুও সেখানে তিনি জিতেছিলেন মাত্র ৫৭ ভোটে, যা কার্যত পরাজয়েরই নামান্তর। রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই ভূ-ভারতেও কেউ কোনওদিন এত কম ব্যবধানে বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন কিনা সন্দেহ। তাই কিছুটা বোধহয় লজ্জায় পড়ে গিয়েছেন স্বয়ং সাংসদ। তাই ইস্তফা দিয়েছিলেন বিধায়ক পদ থেকে। তার জেরেই এখন উপনির্বাচন করাতে হল দিনহাটায়। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল কই। মঙ্গলবার সকাল থেকেই একের পর এক ইভিএম খুলতেই যেভাবে তৃণমূল ঝড় ছড়িয়ে পড়েছে দিনহাটা জুড়ে তাতে পরিষ্কার বাংলাদেশের সীমানা ঘেঁষে থাকা এই কেন্দ্র রীতিমত প্রত্যাখান করেছে বিজেপিকে এবং তাঁকেও, মানে নিশীথ প্রামাণিককে। সেই প্রত্যাখান এতই তীব্র যে ১৪ রাউণ্ড গণনা শেষে তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ তাঁর নিকটতম বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের থেকে ১ লক্ষ ২২ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন।
দিনহাটায় এই বড় ব্যবধানে তৃণমূলের এগিয়ে থাকাই কার্যত বলে দিচ্ছে নিজ গড়েই আর গ্রহণযোগ্যতা নেই নিশীথের। কেননা এখন তিনি শুধু সাংসদই নন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও। অথচ সেই দিনহাটার বুকেই উপনির্বাচনের দিন যেমন দেখা গিয়েছিল নিশীথ তাঁর নিজ বুথেই দলের এজেন্ট বসাতে পারেননি, তেমনি এদিন দেখা যাচ্ছে দলকে সম্মানজনক হারের মুখ দেখাতেও চূড়ান্ত ব্যর্থ তিনি। উপনির্বাচনে সাধারনত শাসকের জয়েরই একটা সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু তা বলে লক্ষাধিক ভোটে জয়! আমজনতা সজোরে প্রত্যাখান না করলে কখনই এই জিনিস ঘটবে না। আমজনতা নিশীথ সহ বিজেপিকে চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখান করেছে বলেই দিনহাটায় বিজেপিকে এত বড় ব্যবধানে হারতে হচ্ছে। নিশীথকে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদে বসিয়ে দলের কী লাভ হচ্ছে সেটা এবার ভাবতেই হবে মোদি-শাহ-নাড্ডাকে। যে নিজ এলাকায় দলকে সম্মানজনক জিত তো বহু দূরের কথা সম্মানজনক হারের মুখও দেখাতে পারে না সে ২০২৪ সালে দলকে কী সুবিধা করে দিতে পারবে সেটা এবার মোদি-শাহ-নাড্ডাকে ভাবতেই হবে। সব থেকে চমকে দেওয়ার বিষয় নিশীথের বুথে বিজেপি ভোট পেয়েছে মাত্র ৯৫টি। সেখানে তৃণমূলের প্রাপ্তি ৩৬০টি ভোট।