নিজস্ব প্রতিবেদক: মাসের পর মাস বন্ধ ২৪এ/১ রুটের ৩৭ টি বাস (Bus)। ফলে চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার বাসযাত্রী থেকে আমজনতা। ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ হাওড়া- মুকুন্দপুর রুটের সবকটি বাস। এই রুট (Route) জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের আওতায়।
দীর্ঘ প্রায় ২ মাস এই রুটে বাস না থাকায় অসুবিধা তৈরি হয়েছে ইএম বাইপাস, সায়েন্স সিটি, পার্ক সার্কাস, সিআইটি রোড, মৌলালি, এসএন ব্যানার্জি রোড, ধর্মতলা ও হাওড়ার নিত্যযাত্রীদের মধ্যে। যাতায়াতের অসুবিধার ফলে চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে রোগির পরিবারও। সাধারণত জেলা থেকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য আসা এই রুটেই রোগীর পরিবারকে বেশি যাতায়াত করতে হয়।
বাস না চলার ফলে যেমন অসুবিধায় পড়েছেন যাত্রীরা (Passenger) তেমনই আর্থিক অনটনে ভুগছে বাস মালিক, চালক ও কন্ডাক্টররা। শুধু তাই নয় ওই রুটে ব্যবসা করা ছোট দোকানদার এবং হকারদেরও অবস্থা শোচনীয়।
জানা গিয়েছে, জরিমানা মিটিয়েও সরকারি নিয়মের জটিলতার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না ছাড়পত্র। ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের মধ্যস্থতায় বেশকিছু শর্ত অনুযায়ী ২০১০ সালে ওই রুটে বাস চালানোর পারমিট দেওয়া হয়েছিল। বাসের দামের অর্ধেক মূল্য কেন্দ্র ও রাজ্য ভাগাভাগি করে দিয়েছিল ভর্তুকি। বকেয়া টাকা একাধিক কারণে মেটাননি বা মেটাতে পারেননি বাস মালিকেরা। এভাবে বাস বন্ধ হতে হতে একদম রুটটাই বন্ধ হয়ে যায় ফেব্রুয়ারি নাগাদ।
পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাস মালিকদের আর্থিক সমস্যার কথা মাথায় রেখে কিস্তির পরিমাপ কমানো হয়েছিল। সেই টাকাও মেটানো হয়নি। ফলে বকেয়া ও সুদ বেড়েছে অনেকটাই। এও বলা হয়, কিছু সমস্যা দুই দিকেই রয়েছে, তা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। পারমিট সহ যাবতীয় নথি সব রয়েছে দফতরে। প্রতিমাসে প্রায় পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার টাকা করে বেশি দিলে বকেয়া মেটানো সম্ভব। বাস মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত প্রায় ১০ বছর ধরে প্রায় ২০ হাজার টাকা করে কিস্তি দেওয়া হত। পরে সমস্যার কথা জানিয়ে তা পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হলে সেই কিস্তি হয় প্রায় ১২ হাজার টাকার। বাসের দাম প্রায় ১৯ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা জানিয়ে বাস মালিকদের দাবি, অর্ধেক মূল্য সরকারকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। বাকি কিস্তি মেটানো জন্য সকলেই ১২ মাসের জন্য ১২ টি করে চেক অগ্রিম জমা দিতেও রাজি। শুধু তাই নয় তাঁরা এও জানিয়েছেন, ফিটনেস সংক্রান্ত শংসাপত্রের জন্য জরিমানা দিতেও প্রস্তুত। তাঁদের বক্তব্য, বাস চললে তাও কিস্তির টাকা শোধ করা যেত কিন্তু বন্ধ রাখার জন্য যাত্রী, সরকার, মালিক, চালক, কন্ডাক্টর কারোরই লাভ হচ্ছে না। এও বলা হয়, এত কথা দিলেও ঋণের টাকা বাকি থাকার জন্য জুটছে না ফিটনেস সংক্রান্ত শংসাপত্র। মাসের পর মাস বাস বন্ধ থাকায় আরও জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
সিটি সাব আর্বান বাস সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাস মালিকদের মেটানো টাকা বিবেচনা করে সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।
এখন সকলেই তাকিয়ে সমস্যার সমাধান কবে হবে সেইদিকে।