নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার ব্রিগেডের বুকে জনগর্জন সভা থেকেই ঘোষিত হয়েছে বাংলার(Bengal) শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) প্রার্থীদের নাম। রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য সেই প্রার্থী(Candidates) তালিকা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই ঘোষণার পরে পরেই নিজ নিজে কেন্দ্রে প্রার্থীরা জোর কদমে নেমে পড়েছেন। আর সেই ভোট প্রচারের কাজে যাতে বিন্দুমাত্র বিতর্ক তৈরি না হয় তার জন্য তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এবার বেশ কিছু কড়া নির্দেশিকা(Rules and Regulations of Party for Candidates) পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা মেনে তাঁদের প্রচার করতে হবে। সেই সব নিয়মের মধ্যে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দুপুর ও রাতের খাওয়ার ওপরে। কার্যত নির্দেশিকায় সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তৃণমূলের প্রার্থীরা প্রচারে বেড়িয়ে কখনই কোনও নামীদামী হোটেল বা রেস্টুরেন্টে খেতে যাবেন না বা সেখান থেকে খাবার আনিয়ে কারও বাড়িতে বসে খাবেন না। দলেরই কোনও কর্মীর বাড়িতে তিনি খাবেন(Lunch at Party Workers Home), সেই কর্মীর বাড়িতে সেদিন যা রান্ন হবে সেটাই। এমনকি প্রার্থীরা কোনও নেতা বা দলের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের বাড়িতেও খেতে পারবেন না। দলের কর্মীদের গুরুত্ব ও সম্মান দিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জোড়াফুল সূত্রে জানা গিয়েছে।
তৃণমূলের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তৃণমূল প্রার্থীরা দলের কর্মীর বাড়িতেই দুপুরের খাবার খাবেন। মাটিতে বসে আর ১০ জন কর্মীদের সঙ্গেই তাঁরা যেন ঘরোয়া খাবার মুখে তুলে নেন। শুধু ফটোশ্যুটের জন্য সেই কাজ যেন না করা হয়। প্রতিদিনই তাঁদের সাধারণ কর্মীদের বাড়িতে খেতে হবে। প্রার্থীরা প্রতিদিন আলাদা আলাদা বিধানসভা কেন্দ্র প্রচারের জন্য বেছে নেবেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা এলাকায় থাকবেন। কর্মীদের বাড়িতে খাওয়ার পর সেখানেই কিছুক্ষণের জন্য তাঁরা বিশ্রাম নেবেন। তারপর আবার প্রচার শুরু করবেন। এই প্রসঙ্গে সামনে এসেছে পদ্মশিবিরের নেতাদের কম্মো। একাধিকবার সামনে এসেছে যে বিজেপির নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কেরা ফটোশ্যুটের জন্য দলের কোনও কর্মী বা নেতা কিংবা কোনও সমর্থকের বাড়িতে মাটিতে বসে পাত পেড়ে খান। কিন্তু সেই সব খাবার আনাই হয় এলাকার কোনও নামীদামী রেস্টুরেন্ট থেকে। তৃণমূলের প্রার্থীদের গায়ে যেত সেই তকমা না লাগে তার জন্য এখন থেকেই সতর্ক পদক্ষেপ করছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
এ প্রসঙ্গে দলের নেতাদের দাবি, ‘বিজেপির দিল্লির নেতাদের মতো ফটো তোলার জন্য কর্মীদের বাড়িতে আমরা যাই না। ওদের খাবার নামী হোটেল থেকে আসে। কর্মীদের বাড়িতে খাবারের টেবিলে বসার পর ছবি তুলে চলে যায়। আমাদের কর্মীদের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। সারা বছর আমরা তাঁদের বাড়িতে যাই। প্রার্থীরাও প্রচারে বেরিয়ে কর্মীদের বাড়িতে যাবেন। খাওয়া-দাওয়া করবেন। গ্রামে গিয়ে দাওয়ায় বসে প্রার্থীরা কর্মীদের সঙ্গে আলোচনাও করবেন। সন্ধ্যার সময় বিভিন্ন গ্রামে আলোচনা সভাতে তাঁরা যোগও দেবেন। আপাতত তাঁরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রচার করবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় কর্মিসভা করার ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হবে। দুর্বল এলাকাগুলি চিহ্নিত করে সেই সব এলাকাগুলিতে প্রচারে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হবে। প্রার্থীও একাধিকবার সেই এলাকাগুলিতে যাবেন।’