নিজস্ব প্রতিনিধি: সাবধান করে দেওয়া হয়েছিল আগেই। সেই সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল নির্দেশ, প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করার। না করলে যে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে সেটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই হুঁশিয়ারিতেও কাজ না হওয়ায় শেষে বাম নেতৃবৃন্দ বহিষ্কারই করলেন দলের ১২জন সদস্যকে। এদের মধ্যে ১জন আবার দলেরই আঞ্চলিক কমিটির সদস্য। নজরে পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার তমলুক(Tamluk) সদর মহকুমার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হওয়া বামেদের(Left) গৃহযুদ্ধ।
আরও পড়ুন অভিষেকের বাবার করা মামলায় সমন শুভেন্দুকে
সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২-১টি সমবায় সমিতির পরিচালন সমিতির নির্বাচনে তৃণমূলকে(TMC) হারাতে প্রকাশ্যেই জোট গড়েছিল বাম আর বিজেপির(BJP) নেতারা। তার দরুণ ১টি সমবায় সমিতিতে হারতেও হয়েছে তৃণমূলকে। সেই ঘটনা ঘটেছিল জেলারই নন্দকুমার ব্লকে। বাম-বিজেপির এই আঁতাত এরপরে রাজ্য জুড়ে শুধু যে ‘নন্দকুমার মডলে’ হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে তাই নয়, রীতিমত জনপ্রিয় হয়েও উঠেছিল। এমনকি এই মডেল ধরেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে হারানোর পরিকল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছিল গ্রামে গ্রামে। কিন্তু এরই পাশাপাশি তা বামেদের মুখও পোড়াচ্ছিল। এরই মধ্যে সামনে চলে আসে খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে সমিতির ৪৩টি আসনের ‘নন্দকুমার-মডেলে’র ধাঁচেই ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’ গড়ে স্থানীয় বিজেপি এবং সিপিএম(CPIM) নেতৃত্ব জোট প্রার্থী দিয়েছে। শুধু প্রার্থী দেওয়াই নয়, প্রকাশ্যে তাঁরা মিছিলও করেন। তার জেরেই কার্যত নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয় আলিমুদ্দিন। সেখান থেকে এরপরই কড়া নির্দেশ গিয়েছিল জেলায় জেলায়, কোনও ভাবেই কোনও নির্বাচনের জন্য বিজেপির হাত ধরা যাবে না। হাত ধরলেই দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এর পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিআই(এম) নেতৃত্বের কাছে গিয়েছে বাড়তি নির্দেশ। খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে যে সব দলীয় বাম সদস্য প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের সবাইকে প্রার্থীপদ প্রত্যহার করতে হবে। না হলেই কড়া পদক্ষেপ নেবে দল।
আরও পড়ুন মিছিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ভাঙড়ে পথ অবরোধ বামেদের
সেই নির্দেশ মানার জন্য শুক্রবার পর্যন্তই ছিল শেষ সময়। কেননা সেদিনই ছিল ওই নির্বাচন থেকে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করার শেষ সময়সীমা। কিন্তু কোনও প্রার্থীই তাঁদের প্রার্থীপদ প্রত্যাহার না করায় শনিবার আলিমুদ্দিন থেকে নির্দেশ যায় জেলা সিপিআই(এম) নেতৃত্বের কাছে তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য। সেই নির্দেশ মেনে শনিবার সন্ধ্যায় লিখিত নোটিস দিয়ে ১২জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদের মধ্যে আছেন দলের আঞ্চলিক কমিটির এক সদস্যও। এর পাশাপাশি দলের আরও ২জন সদস্যকে শোকজ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ওই সমবায়ের ৪৩টি আসনের মধ্যে ২৭টিতে বামেরা এবং ১৬টিতে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে বলে খবর। বামেদের ২৭ জনের মধ্যে বহিষ্কৃত ১২ জন দলীয় এবং এরিয়া কমিটির সদস্য। বাকিরা সাধারণ সমর্থক। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করা হলেও, ওই প্রার্থীদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই বলে ঘোষণা করা হয়েছে।