নিজস্ব প্রতিনিধি: কিছুটা স্বস্তি, তবে তার মধ্যেও থাকছে উদ্বেগ। সাগরের বুকে আবারও দানা বাঁধতে চলেছে ঘূর্ণিঝড়(Cyclone)। স্বস্তির খবর এটাই যে তার অভিমুখ হতে চলেছে ওড়িশা(Odhisa) উপকূল, যা বাংলার(West Bengal) বিপদ অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। উদ্বেগও অবশ্য থাকছে, শেষ মুহুর্তে যদি তা অভিমুখ বদলে চলে আসে বাংলার দিকে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড় ১০০ থেকে ১২০কিমি বেগে আগামী ১০ অথবা ১১ মে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে। যার জেরে প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে তীব্র জলোচ্ছ্বাসের মুখে পড়তে পারে উপকূলবর্তী এলাকা। দিল্লির মৌসম ভবন(Mousam Bhawan) আগেই পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পুডুচেরি ও তামিলনাড়ু সরকারকে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে দিয়েছে। এদিন তাঁরা স্পষ্ট করেছে ঝড়ের অভিমুখ মধ্য ও দক্ষিণ ওড়িশার দিকেই। তবে শেষ মুহুর্তে তা বাঁক নিয়ে হাজির হতে পারে বাংলার উপকূলে।
মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৬ মে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্তের জন্ম হবে। ৭ তারিখ তা নিম্নচাপের রূপ নেবে। একই সঙ্গে ক্রমশ এগিয়ে আসতে শুরু করবে উত্তর পশ্চিম অভিমুখে। ৮ মে তা সুস্পষ্ট নিম্নচাপের চেহারা নেবে ও বঙ্গোপসাগরের(Bay of Bengal) বুকে প্রবেশ করবে। ওই সময় বঙ্গোপসাগরের জলের উষ্ণতা ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই থাকবে যা ওই নিম্নচাপকে ক্রমাগত জলীয় বাষ্পের যোগান দিয়ে যাবে। ৯ মে এই নিম্নচাপ পরিণত হবে সুগভীর নিম্নচাপে। সেদিনই তা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ওড়িশার গঞ্জাম, পুরি ও জগতসিংহপুর এই ৩ জেলার মধ্যে যে কোনও একটি জায়গায় তার ল্যান্ডফল হতে চলেছে ১০ তারিখ ভোরে বা সকালের দিকে। প্রাথমিক ভাবে এই ৩ জেলাতেই সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঝড়ের দাপতে ক্ষতি হতে পারে গজপতি, নয়াগড়, খুরদা, কটক ও কেন্দ্রপাড়া জেলাতেও।
বাংলার আপাতত কোনও বিপদ নেই। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে কিছুটা হলেও বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রাজ্যের দুই উপকূলবর্তী জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা থাকছে। তবে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে মেঘ ঢুকতে পারে যা থেকে হালকা বৃষ্টি হলেও হতে পারে ওই সময়ে। কিন্তু ৮ তারিখ সুগভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার সময় তা ডান্দিকে বাঁক নিলেও নিতে পারে বলে মনে করছে মৌসম ভবন। যদি তা হয় তাহলে ওই ঘূর্ণিঝড় ১০ তারিখ রাতে বা ১১ তারিখ ভোরে বাংলা ওড়িশা উপকূলে ল্যান্ডফল করতে পারে ১২০ থেকে ১৩০কিমি প্রতি ঘন্টা বেগে। সেক্ষেত্রে দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। সেই সঙ্গে তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ভাসতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। ঝড়ের পাশাপাশি প্রবল বৃষ্টির মুখে পড়বে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া জেলা। মাঝারি বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে। হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে।