নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতে তাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) চালু করেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার(Lakhir Bhandar) প্রকল্প। সেই টাকা পান দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) জেলার মগরাহাট(Mograhat) থানা এলাকায় একাতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের মলয়া গ্রামের(Malaya Village) মহিলারাও। এই গ্রামে এতদিন কোনও দুর্গাপুজো(Durga Puja) হতো না। কিন্তু এবারই প্রথম সেই গ্রামে দুর্গাপুজো হতে চলেছে। আর সেই পুজোর টাকা এসেছে গ্রামের মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা থেকে। কেউ সেই টাকা জমিয়েছিলেন টিভি কেনার জন্য, কেউ সেই টাকা রেখেছিলেন সংসার খরচের জন্য। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা নিয়ে এমনই সব পরিকল্পনা ছিল গ্রামের মহিলাদের। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে এবার গ্রামে প্রথম দুর্গাপুজো হতে চলেছে।
মলয়া গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামে কোনওদিন পুজো দেখেননি। সেখানেই একদল মহিলার দৃঢ় মনোভাবে দেবী দুর্গার আরাধনার আয়োজন করা হচ্ছে। সেভাবে কারও কাছে হাত না পেতে সরকারি প্রকল্পের জমানো টাকায় এই অসাধ্য সাধন করার অঙ্গীকার করেছেন ওই মহিলারা। এতকাল ধরে টিভির পর্দাতেই পুজো দেখে শখ মেটাতেন গ্রামবাসীরা। বাঙালির শ্রেষ্ট উৎসবে গা ভাসানোর কোনও সুযোগ ছিল না তাঁদের। এমনকী অষ্টমীর অঞ্জলি দিতেও ছুটতে হতো অনেকটা দূরে। কারও তা দেওয়াই হতো না। ছিল না মাইকের কোনও শব্দ, পাড়ায় মেলা, বা আর কোনওরকম কর্মব্যস্ততা। পুজোয় একপ্রকার ঝিমিয়ে থাকা সেই গ্রামকে উজ্জীবিত করে তুলেছে ‘নারীশক্তি’ নামে মহিলাদের একটি স্বনির্ভর দল।
জানা গিয়েছে মলয়া গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি। পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে যখন আর পাঁচটি গ্রামের মানুষ মেতে থাকে, তখন মলয়া গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের দৈনন্দিন কাজেই মগ্ন থাকেন। পুজোর আমেজটাই কোনওদিন বুঝতে পারেনি বাসিন্দাদের একটা অংশ। মূলত অর্থের কারণেই কখনও পুজোর উদ্যোগ নিতে সাহস করেননি কেউ। কিন্তু এমনটা আর চলতে দিতে আর রাজি নন গ্রামের মহিলারা। গতবছরই তাঁরা ঠিক করেন, এইবার গ্রামে পুজো হবেই। পুজো শুরু করার কথা শুনে শুরুতে অনেক বাধাবিপত্তি এসেছিল। কেউই সমর্থন করেননি। কিন্তু যখন প্রস্তুতি অনেকটা এগিয়ে যায়, তারপর গ্রামের মানুষজন উৎসাহ দিতে থাকে। পুজোর অধিকাংশ খরচ লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা থেকেই হচ্ছে। যেটুকু কম পড়েছে সেটা গ্রামের মানুষ সাহায্য করেছে। গ্রামবাসীদের পুজোর অভিজ্ঞতা নেই। তাই প্রথমবার ছোট করেই করা হচ্ছে। আগামী বছর আরও বড় করে আয়োজন করা হবে।