নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে নেতাজিকে নিয়ে বিজেপি থেকে শুরু করে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও হরেক অনুষ্ঠান থেকে কর্মসূচীর প্রচারে নামতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেই ভোটে গোহারান হারার পরে আর নেতাজিকে নিয়ে বাংলায় কোনও কর্মসূচীতেই দেখা যায়নি প্রধানমন্ত্রীকে। এমনকি রাজ্য সরকারের নেতাজি সম্পর্কিত ট্যাবলোকেও এবার মোদি সরকার দিল্লির রাজপথে ২৬শে জানুয়ারির কুচকাওয়াজে অংশ নিতে দেয়নি। এই বিতর্ক যখন মাথাচাড়া দিয়েছে তখন নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতেই মোদি সরকার ও বিজেপিকে তোপ দাগল হিন্দু মহাসভা। তাঁরা সাফ জানিয়ে দিল মোদি ও বিজেপি নেতাজিকে ভোটপ্রচারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করছে। এটা শুধু নেতাজিরই অপমান তাই নয়, গোটা বাংলা ও দেশেরও অপমান।
এদিন বারাকপুর নীলগঞ্জের সাহেববাগানে আইএনএ বীর শহিদ সৈনিকদের স্মরণে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা, সনাতন ভারত এবং নেতাজি সুভাষ মিশনের পক্ষ থেকে যজ্ঞানুষ্ঠান করা হয়। সেই যজ্ঞানুষ্ঠান শেষে নেতাজির ট্যাবলো বাতিল করা-সহ একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় ঘোষ গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত ছিল প্রতিটি রাজ্যকে বাধ্যতামূলকভাবে নেতাজির কিছু বিষয় নিয়ে উপস্থাপনা করার কথা বলা। সেই জায়গায় কেন্দ্রীয় সরকার তার ট্যাবলো নিচ্ছেন না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অতীতের এবং বর্তমান সরকার একইভাবে ভোটপ্রচারের মাধ্যম হিসাবে নেতাজিকে ব্যবহার করছে। ভোটের আগে নেতাজির জন্মদিনকে পরাক্রম দিবস ঘোষণা হয়েছে। আগামীতে বহু রাজ্যের বিধানসভা ভোট। একইভাবে নেতাজির জন্মদিনের ঠিক আগে ভোটের জন্য ইন্ডিয়া গেটে তার মূর্তি স্থাপন করার কথা ঘোষণা হল। কিন্তু নেতাজির কী হল সে বিষয়ে ভারতবাসীর এখনও ধোঁয়াশায় রয়েছেন। একাধিক কমিশন হয়েছে, ফাইল এসেছে। কিন্তু সবটা প্রকাশ করা হয়নি। জাপানের রেনকোজি টেম্পলে নেতাজির চিতাভস্ম বলা হচ্ছে তার ডিএনএ টেস্ট করে রিপোর্ট দেশবাসীর সামনে রাখা হোক। আগামীতে এই বিষয়গুলি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন নামবে হিন্দু মহাসভা।’
এর পাশাপাশি অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার সংগঠনের কার্যকরী রাজ্য সভাপতি হিসাবে চন্দ্রচূড় ঘোষ গোস্বামী দাবি করেন যে, ‘এই সাহেববাগানে হাজার হাজার আইএনএ বন্দি সৈনিকদের ১৯৪৫ সালে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। সেই শহিদরা আজও তাদের প্রাপ্য সম্মান এবং স্বীকৃতি পাননি। অবিলম্বে তাদের এই সম্মান জানাতে হবে। পাশাপাশি সাহেব বাগানকে হেরিটেজ ঘোষণা করে শহিদ তীর্থ করতে হবে। আইএনএ বীর শহিদদের হত্যাকারী মেননের পরিবার আজও সরকারের পক্ষ থেকে পেনশন পাচ্ছে। অবিলম্বে তাও বন্ধ করতে হবে।’