এই মুহূর্তে




‘চোরমুক্ত’ পঞ্চায়েতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেষে কিনা ৬৫ লক্ষের তছরুপ, নজরে শুভেন্দুর নন্দীগ্রাম

Courtesy - Google




নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের বিরোধী দলনেতা(Leader of Opposition) শুভেন্দু অধিকারীকে(Suvendu Adhikari) হামেশাই বলতে শোনা যায়, ‘চোরমুখ পঞ্চায়েত গড়বো’, ‘চোরমুক্ত রাজ্য গড়বো’, ‘চোরমুক্ত পুরবোর্ড গড়বো’। অথচ সেই বিরোধী দলনেতার নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেরই একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬৫ লক্ষ টাকার চুরির ঘটনার অভিযোগ উঠে গেল। যার মধ্যে ৫০ লক্ষের চুরি আবার ধরাও পড়ে গেল District Level Audit Committee’র রিপোর্টে। আর সেই চুরির পিছনে কিনা উঠে এল বিজেপি(BJP) শাসিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আর সেই পঞ্চায়েতেরই Executive Assistant’র নাম! ভাবা যায়। প্রশ্ন উঠছে, বিজেপি শাসিত সামান্য এক গ্রাম পঞ্চায়েতে লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি ঠেকাতে পারেন না যে বিরোধী দলনেতা, তিনি কীভাবে রাজ্যে চুরি ঠেকাবেন? আর কোনমুখেই বা অন্য কাউকে ‘চোর’ বলবেন? তাঁর দলেই তো ‘চোর’ ধরা পড়ে যাচ্ছে। নজরে শুভেন্দু অধিকারী, নন্দীগ্রাম(Nandigram) আর গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েত(Gokulnagar GP)।

আরও পড়ুন, কল আছে, জল নেই, এমন ৫ লক্ষ বাড়িতে ডিসেম্বরেই পৌঁছে যাবে সংযোগ

২০২৩ সালে পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার হলদিয়া মহকুমার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের গোকুলনগর গ্রামপঞ্চায়েতে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১টি আসনের মধ্যে ১৭টিতেই জয়ী হয় পদ্মশিবিরের প্রার্থীরা। মাত্র ৪টি আসন পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তৃণমূলকে। বাম জমানায় যে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তার অন্যতম ভরকেন্দ্র ছিল এই গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। সেই সময় থেকেই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের আধিপত্য শুরু হয়। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ছাড়ার পর থেকেই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল কোনঠাসা হতে শুরু করে। বাম-বিজেপি এক হয়ে জোড়াফুলের নেতা থেকে কর্মী মায় সমর্থকদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। যারা জমি আন্দোলনের বিরোধীতা করেছিল তাঁরাই এখন গোকুলনগরে বিজেপির মুখ হয়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। সেই গোকুলনগরেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল তাঁরা ‘চোরমুক্ত পঞ্চায়েত’ উপহার দেবেন। কিন্তু সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে গোকুলনগরে বিজেপির জয় ও পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের ১ বছরের মধ্যেই ওঠে লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ।

আরও পড়ুন, ‘মমতাদির পর একদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবে অভিষেক’, শুভেচ্ছা ট্যুইট কুণালের

সেই অভিযোগের জেরেই স্থানীয় থানায় দায়ের হয় FIR। সেই সঙ্গে District Level Audit Committee’র তরফেও বিষয়টি অডিট করে দেখার কথা জানানো হয়। সেই অডিটের রিপোর্ট গতকালই জেলাশাসকের কাছে জমা পড়েছে। সেখানেই উঠে এসেছে, বিজেপি শাসিত গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ৫০লক্ষ টাকা চুরি হয়েছে। মজার কথা হচ্ছে, অভিযোগ ছিল ৩৫ লক্ষ টাকা চুরির। সেই চুরি খুঁজতে গিয়ে আরও চুরির ঘটনা বেড়িয়ে এসেছে। সব মিলিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা চুরির ঘটনা ধরা পড়েছে। যদিও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি বিক্ষুব্ধ জনপ্রতিনিধিদের দাবি, পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের টাকা তছরুপের ঘটনা ধরলে চুরি যাওয়া টাকার পরিমাণ ৬৫ লক্ষ টাকা হয়ে যাবে। এই বিক্ষুব্ধ বিজেপি সদস্যরাই এখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন যে, ‘আমরা চোরমুক্ত পঞ্চায়েতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বোর্ড দখল করেছিলাম। এক বছরের মধ্যে এত লক্ষ টাকা তছরুপ কি চোরমুক্ত পঞ্চায়েতের নমুনা?’ যদিও শুভেন্দু অধিকারীর কানে এইসব অভিযোগ গিয়ে পৌঁছাছে কিনা তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ আছে।  

আরও পড়ুন, কোলে বসে মুখ পুড়িয়েছেন দলের, অবশেষে তদন্ত কমিটি থেকে ডাক তন্ময়কে

তা District Level Audit Committee’র রিপোর্ট কী বলছে? জেলাশাসকের কাছে জমা পড়া সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ৩৫লক্ষ নয়, ৫০লক্ষ টাকা চুরি হয়েছে। টাকা হাতানোর সময় প্রতিটি লেনদেনে বিজেপির পঞ্চায়েতের প্রধান দীনবন্ধু মণ্ডল ও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই Executive Assistant ওটিপি শেয়ার করেছেন। ১০ বারের বেশি অবৈধ লেনদেন করে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ টাকা লোপাট করা হয়েছে এভাবেই। আর্থিক তছরুপের অভিযোগে পুলিশের হাতে ধৃত গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব নীলরতন দাস নিজের অ্যাকাউন্টেই ৩৫ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার করেছেন। এছাড়াও পঞ্চায়েতের এক ঠিকাদারের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার করেছেন। তারপর সেই ঠিকাদারের অ্যাকাউন্ট থেকে আবার ওই পরিমাণ টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন ধৃত সচিব। নিয়মানুযায়ী যে কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে ফান্ডের টাকা পেমেন্ট করার সময় প্রধান ও Executive Assistant’র মোবাইলে OTP যায়। গোকুলনগরের ক্ষেত্রেই তাই হয়েছিল। তারা সেই ওটিপি সচিবকে শেয়ার করেন। এভাবেই উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ অর্থ বেহাত হয়েছে।

আরও পড়ুন, অতি লোভে তাঁতি ডোবে, নিজেই ভুলে গিয়েছিলেন শিক্ষক, খোয়ালেন ১৬ লক্ষ টাকা

গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে আর্থিক দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন অফিসার দেবদুলাল বিশ্বাসের নেতৃত্বে স্পেশাল অডিট টিম তৈরি হয়। সেই টিম ওই পঞ্চায়েতে গিয়ে দুর্নীতির হাঁড়ির খবর বের করে এনেছে। সেই অডিট টিমের কাছে পঞ্চায়েত প্রধান ও ও নির্বাহী সহায়ক জানিয়েছেন, ফান্ডের টাকা নয়ছয় সম্পর্কে তারা কিছু জানতেন না। ধৃত সচিব তাদের অন্ধকারে রেখে ওটিপি আদায় করে ফাঁসিয়েছে। সচিব যখন যা ওটিপি চেয়েছেন তা তারা দিয়েছেন বলেও স্বীকার করেছেন। কিন্তু, সেই ওটিপি নিয়ে যে উনি আর্থিক তছরুপ করছেন, তা নাকি তারা জানতেন না। অডিট টিমের রিপোর্টে অবশ্য বলা হয়েছে, প্রধান কিংবা Executive Assistant’র অ্যাকাউন্টে ওই টাকা যায়নি। তবুও বিজেপির গা থেকে আর কালি মীছা এড়ানো যাচ্ছে না। কেননা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তাঁদেরই দলের।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দলের কেউ নন ,অথচ বিলাসবহুল গাড়িতে বোর্ড লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ

আদালতের নির্দেশে মগরাতে অপরাধী ধরতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ, আহত ৩ ,ধৃত ১১

মিলল না রফাসূত্র, আমজনতাকে বিপদে ফেলে ধর্মঘটে আলু ব্যবসায়ীরা

রামজীবনপুর পুরসভার কাউন্সিলরের স্ত্রী পেলেন ‘হাউস ফর অল’ স্কিমে বাড়ি

জাতীয় পতাকা সম্মান না করলে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করবেন না ভারতীয় চিকিৎসক

নজরে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন, তৃণমূলের বিধায়কদের একগুচ্ছ দাওয়াই মমতার

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর