নিজস্ব প্রতিনিধি: গায়ে তাঁদের উর্দি। সময় অসময় বলে কিছু নেই। দিন হোক কী রাত, ডাক পড়লেই দোউড়াতে হয় ডিউটিতে। পিছনে পড়ে থাকে বন্ধুবান্ধব, পরিবার, প্রিয়জন। তাঁদের জীবনে তাই উৎসব বা ছুটি বলেও কিছু নেই। সবাই যখন উৎসবে মেতে থাকে, তখন তাঁদের যোগ দিতে হয় ডিউটিতে। সবার উৎসব যাতে নিরাপদে কাটে সেটাই দেখেন তাঁরা। কেননা তাঁরাই যে রক্ষক, আইনশৃঙ্খলার। তাঁরা পুলিশ। রাজ্য প্রশাসনের মেরুদণ্ড। সেই পুলিশের জীবন যাতে একদম নিরানন্দে না কাটে তার জন্যও লক্ষ্য রাখতে হয় পুলিশ আধিকারিকদের। সেই সূত্রেই রবিবার জামাইষষ্ঠীর(Jamai Sashthi) দিনে বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়ি(Suri) সাক্ষী থাকল এক অভিনব আয়োজনের। সিউড়ি থানা(Police Station) চত্বরেই এদিন বসেছিল জামাইবরণের আসর। আর সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন সিউড়ি থানার আইসি মহম্মদ আলি(IC Muhammad Ali)। সিউড়ি থানায় কর্মরত বিবাহিত পুলিশকর্মী, পুলিশ আধিকারিক ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের এদিন তিনিই কার্যত জামাই আদরে বরন করে নিলেন। সঙ্গে ছিল অবশ্যই মহাভোজ।
কাজের চাপে পুলিশ কর্মী থেকে পুলিশের আধিকারিক, মায় সিভিক ভলেন্টিয়াররাও উত্সব অনুষ্ঠানে পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠানে সেভাবে যোগ দিতে পারেন না। তারফলে বহুক্ষেত্রেই দেখা যায় পুলিশকর্মি থেকে আধিকারিকেরা মনকষ্টে ভুগছেন। কেউ কেউ তো রীতিমত মানসিক অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়েন। অনেকেই রাগচটা হয়ে ওঠেন। আত্মহত্যার ঘটনাও এসব ক্ষেত্রে বিরল নয়। এই অবস্থায় জামাইষষ্ঠীর দিন বিবাহিত পুলিশকর্মী থেকে আধিকারিক মায় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের যাতে খারাপ না লাগে, তাঁরা যাতে এই উৎসবে নিজেদের বঞ্চিত মনে না করেন তার জন্য এদিন সিউড়ি থানা চত্বরেই আইসি মহম্মদ আলি জামাইষষ্ঠীর আয়োজন করেন। প্রথা মেনে এদিন থানার বিবাহিত পুলিশকর্মী, আধিকারিক ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের থানাতেই পাত পেড়ে বরণ করে নেওয়া হয়। সঙ্গে ছিল এলাহি ভুরিভোজ। সবাই এসেছিলেন একেবারে জামাই সেজে। তবে দুধসাদা পাজামা পাঞ্জাবি পরে। রীতিমতো ডেকরেটার্রস ডেকে টেবিল চেয়ার পেতে খাওয়ার আয়োজন করা হয়। খাবারের তালিকায় লুচি থেকে শুরু করে, নানা রকমের ফল সহ সব ধরনের পদের ব্যবস্থা করা হয়।