নিজস্ব প্রতিনিধি: বছরখানেক আগে স্বামীকে নিয়ে গিয়েছে বাঘে। সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। স্বামীর মৃত্যুর পর তিন সন্তানকে অন্ন জোগাতে নিজের কাঁধে সংসার তুলে নিয়েছেন মিনতি হালদার। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলীর দেউল বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মিনতির বয়স ৫০ বছর ছুঁই ছুঁই। তারপরেও কাঁকড়া ধরে, মাছ ধরে হাল টেনে চলেছেন সংসারের। বাতাসে পুজোর গন্ধ। থেমে নেই মিনতির জীবন সংগ্রাম। দুর্গা পুজোর আবহে কেমন আছেন মিনতি? তাই নিয়ে এই প্রতিবেদন।
সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের পেটে গিয়েছেন স্বামী। রোজগারের সেই একই পথকে আবার বেঁচে থাকার পথ হিসাবে বেছে নিয়েছেন মিনতি হালদার। কারণ নোনাজলে মাছ কাঁকড়া ধরা ছাড়া রোজগারের বিকল্প ব্যবস্থা আর নেই প্রত্যন্ত এলাকায়। কাঁকড়া ধরা ছাড়াও কখনও পরিচারিকার কাজ করেন মিনতি। এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে তাঁর। সংসারের তিন প্রাণীর পেটের ভাত জোগাতে হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে চলেছেন মিনতি। বছর খানেক আগে স্বামী স্বপন হালদার সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে আর ফেরেনি। তারপর থেকে সংসারের হাল ধরেন দাঁতে দাঁত চেপে। পুজোর আগে ভারাক্রান্ত মিনতির মন। যা রোজগার হয় তাতে ভাত জোগাতে খরচ হয়ে যায়, তাই সন্তানদের জন্য নতুন জামা কিনে দেওয়া হবে না মিনতির। তাঁর আক্ষেপ, পুজাতে সবাই নতুন জামা পরে, খাবার খায়, আমি আমার সন্তানদের কোনও দিন নতুন জামা কিনে বা খাবার কিনে দিতে পারি না।
কীভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন এই কঠিন জীবন সংগ্রাম? তিনি জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর এখন আর ভয় করে না গভীর জঙ্গলে যেতে। কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছেন, কিন্তু মেলেনি কিছু। তিনি আরও জানান, এলাকায় অন্য কোন কাজ নেই। রুজির টানে তাই বাধ্য হয়ে জঙ্গলে যেতে হয়। তবে সরকার থকে বাড়ি পেয়েছেন মিনতি। পাচ্ছেন রেশনের চাল৷ এতে অসুবিধা কিছুটা দূর হয়েছে বলে জানালেন তিনি।