নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সব থেকে রক্তাক্ত অধ্যায় ছিল কোচবিহার জেলার(Coachbehar District) শীতলকুচিতে(Sitalkuchi) বুথের কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গুলি চালনার ঘটনা। সেই ঘটনায় বুথের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা ৪জন ভোটার মারা যান। সেই ঘটনায় আজ অবধি কেউ গ্রেফতার হয়নি। সেই সময়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার হিসাবে ছিলেন দেবাশিষ ধর(Debashish Dhar)। এবার ২৪’র ভোটে তিনিই বিজেপির প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে। সেই দেবাশিষকেই বৃহস্পতিবার নিশানা বানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার প্রচারে মাথাভাঙার গুমানিরহাট হাইস্কুলের মাঠে আয়োজিত জনসভা থেকেই তিনি নাম না করেই নিশানা বানান দেবাশিষকে। সেই সঙ্গে একহাত নেন বিজেপিকেও।
এদিন মমতা বলেন, ‘এজেন্সি দিয়ে ভোট পরিচালনা করছে, আমি বলি কেউ মাথা নিচু করবেন না। বিজেপি(BJP) বলছে ভোট দাও, এজেন্সি থেকে মুক্ত হও। নির্বাচনী আচরণ বিধি মানে না বিজেপি। শীতলকুচিতে পাঁচজনকে গুলি করে মারা হয়েছিল। নির্বাচন চলাকালীন ছুটে এসে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। যে লোকটির নির্দেশে এটা করা হয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে সরকারের দুটি তদন্ত চলছে। ভিজিলেন্স ক্লিয়ার হয়নি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দিয়েছে। কোনও আইনকানুন মানেন না, তিনি আবার বীরভূমে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। কেন বীরভূমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে? বলছে, আমি ওই স্থানে এসডিপিও ছিলাম, সো হোয়াট? কেন্দ্রের সরকার কোনও আইন মানে না, সংবিধানকে গুরুত্ব দেয় না। কেউ এসডিপিও থেকে শুরু করে কন্সটেবল হবে, সিভিক পুলিশ, এসডিও, বিডিও ডাক্তার হবে। কিন্তু কারও অধিকার নেই কোনও রাজনৈতিক দলের দালালি করে মানুষের প্রাণ কেড়ে নেব।’
বস্তুত দেবাশিষকে বিজেপির প্রার্থী করায় খোদ পদ্ম শিবিরেরই অনেকে ক্ষুব্ধ। কেননা তাঁদের অভিমত, দেবাশিষ চাকরি ছেড়ে প্রার্থী হলেও শীতলকুচির ঘটনায় এবার বার বার বলা হবে বিজেপির নির্দেশেই গুলি চালানো হয়েছিল। এই অবস্থায় বীরভূমেও কোনও বিজেপি নেতা দেবাশিষের হয়ে প্রচারে নামতে চাইছেন না। এবার শীতলকুচির ঘটনা উস্কে দিয়ে মমতা এদিন একদিকে যেমন জেলার বিজেপি বিরোধী সংখ্যালঘু ভোটকে নিজের পালে টেনেছেন, তেমনি সেই নৃশংস ঘটনাকে সামনে এনে বিজেপিকে কোনঠাসাও করেছেন।