নিজস্ব প্রতিনিধি: আবারও পোস্টার(Postar)। এবারেও সেই জঙ্গলমহলে(Junglemahal)। তবে এবারের পোস্টার ঘিরে শুধু চাঞ্চল্যই ছড়িয়ে পড়েনি, ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্কও। কেননা সাদা কাগজে লাল কালিতে লেখা ওই পোস্টারে দেওয়া হয়েছে খুনের হুমকি। আগামি ৮ এপ্রিল মাওবাদীদের(Maoist) ডাকা বন্ধ(Bandh) পালন না করলে তাঁকে ‘প্রাণদণ্ড’ দেওয়া হবে। এমনই দাবির পোস্টার বৃহস্পতিবার উদ্ধার হয়েছে জঙ্গলমহলের বাঁকুড়া জেলার বারিকুল(Barikul) থানা এলাকা থেকে। যদিও এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বারিকুল থানার মেলাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কেন্দতল মোড় এলাকায় একটি গাছে সাঁটানো পোস্টার দেখতে পান স্থানীয়রা। তাতে হুঁশিয়ারির সুরে লেখা – ‘৮ তারিখ বাংলা বন্ধ পালন না করলে মৃত্যুদণ্ড হবে।’ রাজ্য সরকার আত্মসমর্পণকারী প্রাক্তন মাওবাদীদের রাজ্য পুলিশে হোমগার্ডের চাকরি দিচ্ছে। সেই সঙ্গে হাতির হামলায় মৃত পরিবারদের একজনকেও রাজ্য পুলিশে চাকরি প্রদান করা হচ্ছে রাজ্যের তরফে। মাওবাদীদের দাবি, রাজ্য পুলিশের স্পেশাল হোমগার্ড পদে যাদের চাকরি দেওয়া হচ্ছে তারা আদতে ‘ক্রিমিন্যাল’। সেই চাকরি প্রদানের প্রতিবাদেই আগামিকাল বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে মাওবাদীরা। গত বছর ডিসেম্বরে মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষানদা ওরফে প্রশান্ত বসু গ্রেফতার হওয়ার প্রতিবাদে মাওবাদীরা বনধ ডেকেছিল। সেই বন্ধে ভালো সাড়া পড়েছিল বাঁকুড়া-সহ জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে। আগামিকাল কী হয় সেই কিদেই এখন তাকিয়ে রয়েছেন সকলে। কিন্তু সেই বন্ধের আগেরদিনেই প্রাণনাশের হুমকি সম্বলিত পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, এদিন বেলপাহাড়িতে একটি ল্যান্ডমাইন উদ্ধারের খবরও মিলেছে। ঝাড়খন্ড সীমান্তবর্তী ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি থানার সীমানা এলাকায় বৃহস্পতিবার সিআরপিএফ জওয়ানরা তল্লাশি চালায়। তখনই ল্যান্ডমাইন দেখতে পায় জওয়ানরা। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গোটা এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে সিআরপিএফ জওয়ানদের ১৮৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের ক্যাম্প। সেই কারণে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন সিআরপিএফের ১৮৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের সিও বি আর মিনা, আধিকারিক ঘনশ্যাম গুজ্জর ও ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে রওনা দিয়েছে বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরাও। এলাকায় তল্লাশি অভিযানও শুরু করেছে পুলিশ ও সিআরপিএফ জওয়ানরা।
সব মিলিয়ে জঙ্গলমহলে আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে। যদিও পুলিশ এখনও পর্যন্ত মানতে নারাজ ওই পোস্টার মাওবাদীরা দিয়েছে। তাঁদের দাবি, মাওবাদীদের নাম করে কেউ বা কারা ওই পোস্টার ছড়িয়ে জঙ্গলমহলের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ছন্দ কেটে দিতে চাইছে। তাই পরিকল্পনা করে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গ্রামগুলিতে ওই ধরনের পোস্টার ছড়িয়ে দিচ্ছে।