নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘অশনি’র টানে বেশ কিছুটা এগিয়ে এসেছে মৌসুমি বায়ু। দিল্লির মৌসম ভবনের দাবি, এবারে সময়ের আগইে দেশে পা রাখতে চলেছেন বর্ষারানী। স্বাভাবিক সময়ের এক সপ্তাহ আগেই এবার কেরলে প্রবেশ করতে চলেছে দক্ষিণ-পশ্চিমী মৌসুমি(Monsoon) বায়ু। সাধারনত দেশের মূল ভূখন্ডে সবার আগে বর্ষা আসে কেরলে(Kerala)। সেখানে বর্ষা আসার স্বাভাবিক তারিখ ১ জুন। তারও আগে ২০ মে নাগাদ বর্ষা পা রাখে আন্দামানের(Andaman) বুকে। কিন্তু এবার সেই মৌসুমি বায়ু বেশ কিছুটা এগিয়ে এসেছে ‘অশনি’র টানে। তাই শুধু আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেই নয়, দেশের মূল ভূখণ্ডেও বর্ষা তাড়াতাড়ি পা রাখতে চলেছে বলে দাবি মৌসম ভবনের। তাঁদের হিসাব মতন আগামী ১৫ মে বর্ষা পা রাখছে আন্দামানে। আর তার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় ২১ মে নাগাদ কেরলে বর্ষা ঢুকে পড়তে পারে। আর সেই হিসাবে এবার বাংলায়(Bengal) প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, তাহলে কী এখানেও বর্ষা তাড়াতাড়ি আসতে চলেছে!
বাংলার আগে বর্ষা আসে উত্তর-পূর্ব ভারতে। সেখান থেকে তা পা রাখে উত্তরবঙ্গের বুকে। তারপর তা ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। কলকাতার(Kolkata) বুকে বর্ষার বৃষ্টি(Rain) শুরু হলে রাজ্যে বর্ষা পা রেখেছে বলে ধরা হয়। সেই হিসাবে উত্তরবঙ্গে বর্ষা পা রাখে ১০ জুন। ২০ জুনের মধ্যেই বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়ে যায় কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও। কিন্তু এবার যদি বর্ষা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দেশে পা রাখে তাহলে এই সময়ও বাংলার ক্ষেত্রেও যে এগিয়ে আসবে সেটাই স্বাভাবিক। অর্থাৎ বাংলায় ১০ জুনের আগেই বর্ষা চলে আসতে পারে। কিন্তু এই ধারনার সঙ্গে একমত নন আবহাওয়াবিদরা। তাঁদের দাবি, এমন অনেক সময় দেখা গিয়েছে আন্দামান বা কেরলে নির্দিষ্ট সময়ে বা তারও আগে বর্ষা হয়তো ঢুকে গিয়েছে। কিন্তু বাংলায় তা ঢুকতে দেরী করেছে। আসলে কেরল বা আন্দামান থেকে বাংলার দূরত্ব অনেকটাই। পথে নানা কারনে সেই গতি ধাক্কাও খায়। বাংলার বুকে বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের বুকে বর্ষাকে টেনে আনে ছোটনাগপুর মালভূমি। সেখানে গরম যত চড়ে বাংলার বুকে মৌসুমি বায়ুর আগমন ততই তরান্বিত হয়। কিন্তু এবারে সেই ছোটনাগপুর মালভূমি বেশি উত্তপ্ত হচ্ছে না। যার জন্য দক্ষিণবঙ্গে এবারে কালবৈশাখীর সংখ্যাও খুব কম ছিল।
তাই এখনই ধরে নেওয়ার প্রয়োজন নেই যে আন্দামান ও কেরলে বর্ষা তাড়াতাড়ি আসছে মানেই বাংলাতেও বর্ষা তাড়াতাড়ি আসবে। পথে তার দেরী হতেই পারে। পাশাপাশি বর্ষা যদিও বা তাড়াতাড়ি বঙ্গে পা রাখে তাহলেও এবারে বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টির থেকে কমই পাবে বাংলা। উত্তর-পূর্ব ভারতেও এবারে স্বাভাবিকের থেকে কম বৃষ্টি মিলবে। তুলনায় স্বাভাবিকের থেকে এবার অনেকটাই বেশি বৃষ্টি হবে দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলিতে। আর এখানেই আশঙ্কা রাজ্যের জলাধারগুলি যদি বর্ষার জল ধরে রাখতে না পারে তাহলে আগামী শীতে শুখা মরশুমে রাজ্যে চাষের ক্ষেত্রে জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে।