নিজস্ব প্রতিনিধি,মন্তেশ্বর: দুজনেই খুনের আসামী ।বন্দি রয়েছেন বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। আর সেখান থেকেই দুজনের পরিচয় মন আর তারপর বন্ধুত্ব। আর সেই বন্ধুত্বই ধীরে ধীরে গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। দুই পরিবারকে রাজি করিয়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে পাঁচ দিনের প্যারোলে মুক্তি নিয়ে মন্তেশ্বর এর কুসুম গ্রামে মুসলিম রীতি মেনে রেজিস্ট্রি ম্যারেজের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন জেলবন্দি ২ আসামী। এদিন বুধবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকলো মন্তেশ্বরের(Monteaswar) কুসুমগ্রাম এলাকা।
অসমের বাসিন্দা আব্দুল হাসিম আট বছর ধরে একটি খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অপরাধে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে জেলবন্দি। আরো দু’বছর তাকে এই সাজা খাটতে হবে।একই সাথে বীরভূমের(Birbhum)বাসিন্দা শাহানারা খাতুন ছয় বছর ধরে একটি খুনের ঘটনায় তিনিও জেলবন্দী। আর সেখান থেকেই দুজনার পরিচয় আর তারপর প্রেম। এরপর পেরোলে মুক্তি পেয়েই বিয়ের আসরে হাজির নব দম্পতি। আসা যাওয়ার জন্য আদালত তাদের দুই দুই অর্থাৎ মোট চার দিন অনুমোদন করেছেন এবং বিবাহ রীতি সম্পন্ন করতে একটি দিন বরাদ্দ করেছে। এখন এই নব দম্পতি তারা চান এই সংশোধনাগারের বাইরে বেরিয়ে স্বাভাবিক সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে। সংশোধনাগারের মূল উদ্দেশ্য হলো যারা কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তাদের সংশোধন করে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে দেওয়া।
এই নবদম্পতি সংশোধনাগারের সেই প্রচেষ্টাকে সার্থক রূপ দিল। বিগত অপরাধে তারা যে রীতিমতো অনুতপ্ত তারা তারা বিবাহ অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে বারবার মুখের প্রকাশ করলেন। আদালত মনে করে অপরাধী যখন তার অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয় তখন তাকে সুযোগ দিতে হয় সুস্থভাবে বাঁচার জন্য। কারণ সমাজের স্রোতে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার প্রত্যেকের রয়েছে। তার মধ্যেও যারা অপরাধী যুক্ত হয়ে যায় তাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতেই সংশোধনাগার একটি বড় প্ল্যাটফর্ম। যেখানে কেউ সত্যি সংশোধিত হয় কেউ আবার থেকে যায় অন্ধকার জীবনের পথপ্রদর্শক হয়ে। এই দুই জেলের নব দম্পতি বন্দিকে দেখতে হাজির হয়েছিলেন বহু মানুষ ।প্রত্যেকেই তাদের আগামী স্বাভাবিক জীবনের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।