নিজস্ব প্রতিনিধি,নাকাশিপাড়া: দুই নিষ্পাপ শিশু সহ আদিবাসী মহিলাকে বাংলাদেশী সন্দেহের ভিত্তিতে প্রায় এক বছর মিথ্যা মামলায় জেল বন্দি করে রাখার অভিযোগ নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার(Nakashipara P. S.) পুলিশের বিরুদ্ধে ।ভারত ও বাংলাদেশ, রাজনৈতিক ভাবে দুটি দেশের মাঝে কাঁটাতারের বেড়া বসে গেছে সেই স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকেই। সরকারিভাবে দুটি দেশে যাতায়াতের ক্ষেত্রে একাধিক নিয়মাবলী প্রযোজ্য থাকলেও প্রকৃতি আজ অবধি ছয় ঋতুর বন্টনের কোন তারতম্য বলবত করেনি, এই দুই দেশের মাঝে। একদা ভারতবর্ষের অন্তর্গত অবিভক্ত বঙ্গদেশ স্বাধীনতার পরবর্তীতে ভারতবর্ষের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ হিসেবেই পরিচিত হয়েছে। একটা দেশ বিভাজন বদল এনেছে একাধিক।
এই দুই দেশ এর অগণিত মানুষের জীবনে ও সংসারে। বাংলাদেশ থেকে এই দেশে অনুপ্রবেশের সময়ে বহু অনুপ্রবেশকারী যেমন অনেক সময় ধরা পড়ে তেমনি অনেক ক্ষেত্রে অনেক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশী সন্দেহের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন আইনের কাঠগড়ায় এসে দাঁড়াতে হয় ।ঠিক এমনই এক ঘটনা সামনে এসেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়া অঞ্চলে। সূত্রের খবর ২০২৩ সালের ২৪ শে মে বর্ধমান জেলার জামুড়িয়ার দুই নিষ্পাপ সহ দুজন আদিবাসী মহিলা রঙ্গোলি পাসি ও নিশা বেজ নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানা অঞ্চলে কোলের শিশু নিয়ে বাড়ির মানুষের জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় ছিল ।সেই সময় নাকাশিপাড়া থানার কর্তব্যরত পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং উপযুক্ত প্রমাণাদি দেখানোর কথাও বলা হয়। কিন্তু আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই দুই মহিলার কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের উপযুক্ত কোন প্রমাণ সেই সময় না থাকায় ও হিন্দিভাষী এই দুই মহিলা বাংলা ভাষায় তাদের সাথে যথাযথ কথোপকথন করতে না পারায় তাদের বাংলাদেশী(Bangladeshi) সন্দেহে আটক করে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ।
অভিযুক্ত এই দুই মহিলার উকিল সুমন সাহা জানিয়েছেন প্রায় ৩৪৭ দিন জেল কাস্টাডিতে থাকার পর বর্তমানে কৃষ্ণনগর জেলা ও দায়রা আদালতে(Krishnanagar Court) বিচারপতি অর্ণব মুখার্জির বিচারে অভিযুক্ত দুই নিষ্পাপ শিশু সহ দুই আদিবাসী মহিলার যে বাংলাদেশী তেমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে তাদেরকে দীর্ঘ এক বছর মামলা চলার পর বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। এই ঘটনা থেকে সমাজের একাংশের বুদ্ধিজীবী মানুষ প্রশ্ন তুলছেন পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ শাহজাহানদের মতো ক্রিমিনালদের ধরতে পারে না , অথচ নিষ্পাপ গরিব আদিবাসী পরিবারদের নিষ্পাপ দুটি শিশু সহ দুই আদিবাসি নারীকে মিথ্যা মামলায় জেল বন্দি করে বাহাদুরি করে । তাদের ভুলেই আজ জেল খাটতে হল আদিবাসী পরিবারের সদস্যদের । নিষ্পাপ শিশুরা যে কি অপরাধ করেছিল যার জন্য তাদের আজ জেল খাটতে হলো তা তারা নিজেরাই জানে না । এখন প্রশ্ন আইনের রক্ষক যারা তারাই যদি এরকম অবিবেচক এর মতন কাজ করেন তাহলে প্রশাসনের উপর সাধারণ মানুষ কিভাবে আস্থা রাখবেন।
শুধুই কি দায়িত্বে গাফিলতি নাকি আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বলেই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর প্রবণতা প্রশ্ন তুলছে সমাজের বুদ্ধিজীবীরা। পুলিশের ভুলে দুটি নিষ্পাপ শিশুকে জেল খাটতে হল । ঊর্ধ্বতম কর্তৃপক্ষের উচিত ঘটনা তদন্ত করে দোষী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া । যাতে ভবিষ্যতে আর কোন শিশু ও অন্যান্যদের বিনা কারণে মিথ্যা তকমা নিয়ে জেল খাটতে না হয় ।