নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচবনের(Panchayat Election) মুখে ক্ষোভ চড়ছে নদিয়া(Nadia) জেলার রানাঘাট-২ ও হাঁসখালি ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দাদের মধ্যে। আর তার জেরে বিপাকে পড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাঁদের এই বিপাকে পড়ার জন্য আবার দায়ী তাঁদেরই বিধায়ক অসীম বিশ্বাস(Ashim Biswash) যিনি রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র(Ranaghat North East Assembly Seat) থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে। গ্রামবাসীর এই ক্ষোভের নেপথ্যে রয়েছে বিধায়কের দেখা না পাওয়ার ঘটনা। অভিযোগ, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই নিজের এলাকায় আর দেখা যায় না অসীম বিশ্বাসকে। শুধু তাই নয়, স্কুল, কলেজের শংসাপত্র হোক বা যে কোনও সরকারি কাগজ, সই করাতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও সাধারণ মানুষকে ফিরে আসতে হচ্ছে রানাঘাট উত্তর পূর্বের বিজেপি বিধায়ক(BJP MLA) অসীম বিশ্বাসের কার্যালয় থেকে।
রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রটি মতুয়া ভোটার অধ্যুষিত। মোট ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা রয়েছে এই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে। এর মধ্যে রানাঘাট-২ ব্লকের আড়ংঘাটা, বহিরগাছি, দত্তফুলিয়া, যুগলকিশোর, কামালপুর ও রঘুনাথপুর হিজুলি-২ গ্রাম এলাকা রয়েছে তেমনি রয়েছে হাঁসখালি ব্লকের বগুলা-১, বগুলা-২, মামজোয়ান, রামনগর বড় চুপড়িয়া ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। কিন্তু এই ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গ্রামবাসীদের একযোগে দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই অসীমের আর দেখা মিলছে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপি বিধায়কের এই অনুপস্থিতি নিয়ে ওই ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ চরম আকার নিচ্ছে। যার জেরে বিপাকে পড়েছে বিজেপিও।
এলাকাবাসীদের দাবি, স্কুল, কলেজের ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট, রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট কিংবা যে কোনও নথিতে বিধায়কের স্বাক্ষর করানোর জন্য তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে আসতে হচ্ছে তাঁদের। বাধ্য হয়ে জেলা পরিষদের সদস্যের কাছে গিয়ে ভিড় জমাতে হচ্ছে তাঁদের যিনি আবার তৃণমূলের। এলাকার বাসিন্দারা সাফ জানাচ্ছেন, একুশের নির্বাচনের পরে এখনও পর্যন্ত কোনওদিন তাঁরা তাঁদের বিধায়ককে চোখেই দেখেননি। এলাকার কোনও উন্নয়নমূলক কাজে তাঁকে দেখা যায় না। এলাকায় বিজেপি বিধায়কের এই অনুপস্থিতিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ইস্যু করতে শুরু করেছে এলাকারই তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিধায়কের এই অনুপস্থিতি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারাও। তবে স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্য বিজলী বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে জেলা পরিষদের সদস্য আমি। যখন স্কুল-কলেজের ফর্ম ছাড়া হয়, তখন আমার বাড়িতে দোতলা থেকে একতলা পর্যন্ত পড়ুয়াদের লাইন লেগে যায়। এমনও সময় যায়, যখন একেক দিনে আমাকে ৫০০ থেকে ৭০০টি সই করতে হয়। অথচ এই দায়িত্ব আমার একার নয়।’