নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রশান্ত কিশোর(Prashanta Kishore), সংক্ষেপে পিকে। অন্তত এই নামেই তাঁকে দেশের মানুষ চেনেন একডাকে। কেননা তিনি দেশের নামকরা ভোট কুশলী। ইদানিং তাঁর সঙ্গে কংগ্রেসের কথা চলছিল, যদিও তা ফলপ্রসূ হয়নি। ঠিক তারপরেই শনিবার দিল্লিতে(New Delhi) দাঁড়িয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) জানিয়ে দিলেন, ভোটকুশলী হিসাবে তাঁদের সঙ্গেই আছেন প্রশান্ত কিশোর। এদিন এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতা সাফ জানিয়েছেন, ‘দলের মধ্যে তাঁর ভূমিকা নিয়ে মতপার্থক্য ছিল। তবে, এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয় যে তিনি ভোটকুশলী হিসাবেই দলে কাজ করবেন।’ বুঝতে অসুবিধা নেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই পিকে’কে এখনই ছুটি দিতে চাইছেন না মমতা বা তৃণমূল(TMC)। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার বুকে পিকে’র সংস্থা আই প্যাকের সঙ্গে কাজ করে তৃণমূল হাতেগরমে ফল করেছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এবারেও তাঁরা পিকে’কে ধরে রাখতে চাইছেন, সেটা এদিন বুঝিয়ে দিলেন মমতা।
গত সপ্তাহে প্রশান্তের সঙ্গে কংগ্রেসের(INC) শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক হয়। সেই সময়েই জল্পনা ছড়িয়েছিল যে প্রশান্ত বোধহয় কংগ্রেসে যোগদান করবেন। সেই জল্পনা সত্যি করে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পিকে-কে দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাঁকে ‘এমপাওয়ার্ড অ্যাকশন গ্রুপ’- এর অংশ হিসাবে দলে যোগদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলেই জানা যায়। কিন্তু পিকে চেয়েছিলেন কংগ্রেস তাঁর দেখানো পথে চলুক। যদিও তাতে রাজি হননি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। এরপরেই কংগ্রেসের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন পিকে। কংগ্রেস অবশ্য পরে জানায়, পিকে’র প্রস্তাব মেনে নেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। কেননা কংগ্রেস একটি জাতীয় দল। পিকে কেন সেই দলের হর্তাকর্তা বিধাতা হবেন। তাছাড়া তাঁর সঙ্গে তৃণমূল ও তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির চুক্তি রয়েছে। কংগ্রেসকে ওই দুই দলের সঙ্গে বাংলা ও তেলেঙ্গানায় লড়াই করতে হচ্ছে। পিকে ওই দুই দলের সঙ্গে কাজ করলে কংগ্রেসের স্বার্থ কীভাবে রক্ষা করবেন? স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস ও পিকে এক হতে পারেনি।
এই আবহে এদিন দিল্লিতে দাঁড়িয়েই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন যে ভোটকুশলী হিসেবে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই আছেন। যদিও এটাও ঘটনা যে পিকে’র সংস্থা আই প্যাককে সঙ্গে নিয়েও তৃণমূল ত্রিপুরা হোক বা গোয়া কোথাও সাফল্য পায়নি। এমনকি বাংলায় আমজনতার পাশাপাশি তৃণমূলের একতা বড় অংশই এটা মানতে চান না যে পিকে’র হাত ধরে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্যের মুখ দেখেছে ঘাসফুল শিবির। যদিও মমতা যে পিকে’কে আপাতত ধরেই রাখছেন যেটা তিনি এদিন নিজেই জানিয়ে দিলেন।