নিজস্ব প্রতিনিধি: ছোট থেকেই মনে অদমাই ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে কু ঝিক ঝিক করে ছুটে চলা ট্রেন চালাবেন তিনি। কিন্তু বিধি সেজেছিল ভাগ্য। আর্থিক জোর না থাকায় পড়াশোনাটাই বেশিদিন টানতে পারেননি তিনি। তাই ট্রেনের চালকও হয়ে উঠতে পারেননি। কিন্তু জীবনসন্ধ্যায় দাঁড়িয়ে এবার তিনিই এক আস্ত ট্রেন নির্মাণ করে সবাইকে চমকে দিলেন। নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তির জেরে কোনওরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই বাড়িতে বসে সেই চলমান ট্রেন তৈরি করে যিনি চমকে দিলেন সকলকে তাঁর নাম প্রভাস আচার্য(Prabhas Acharya)। বাড়ি হুগলি(Hoogly) জেলার শ্রীরামপুরে(Sreerampur)। তিনিই বাড়িতে বসে বানিয়ে ফেলেছেন লোকাল ট্রেনের মতো দেখতে একটি মডেল ট্রেন যা বিদ্যুতে চলে। তবে অবশ্যই তা বড়সড় খেলানা গাড়ি। কিন্তু সেটা করেও চমকে দিয়েছেন সকলকে।
পেশায় পুরোহিত প্রভাতবাবু পড়াশোনা বেশিদূর টানতে না পারলেও স্কুলে ওয়ার্কিং ক্লাসে ট্রেন তৈরির কাজ কিছুটা শিখেছিলেন। তারপর থেকে ট্রেন তৈরি করা তাঁর নেশা হয়ে দাঁড়ায়। নিজেই বাড়িতে ট্রেন তৈরির চেষ্টা শুরু করেন। অবশেষে সেই চেষ্টা তাঁর সফল হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি এই লোহার ট্রেনটি দেখতে আমাদের বাংলায় চলা লোকাল ইএমইউ ট্রেনের মতোই। তাতে আছে একের পর এক বগি, দরজা, জানলা, বসার আসন, হাতল, মায় চাকাও। সেই ট্রেন চলে আবার লাইনের ওপর দিয়ে। আছে প্যান্টোগ্রাফও যা বিদ্যুৎ সংযোগ বজায় রাখে। সেই বিদ্যুতেই চলে ট্রেন। প্রভাতবাবুর এহেন মডেল ট্রেন কিন্তু অর্ডার দিয়ে যে কেউ তৈরি করাতেই পারেন। ইতিমধ্যেই গোটা ৬ সেট এই ধরনের ট্রেন বিক্রি করে ঘ্রে টাকা তুলেছেন প্রভাসবাবু। কার্যত তাঁর শখ এখন ঘরে লক্ষ্মীও এনে দিচ্ছে। প্রভাসবাবু এই ট্রেনের নাম দিয়েছেন, ‘মডেল ইলেকট্রিক ট্রেন’(Model Electric Train)।
কিন্তু এত কিছু থাকতে হঠাৎ এই ট্রেন তৈরির শখ কেন? উত্তরে প্রভাসবাবু জানালেন, ‘ট্রেন চালানোর ইচ্ছা ছিল। কিন্তু অতীতে যে সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, সেটা আর সম্ভব হয়নি। তাই এখন পুরোহিতের কাজ করে সময় যতটুকু পাই, বাড়িতেই মডেল ট্রেন তৈরি করছি। আগামী দিনে যদি কোনও সরকারি সহায়তা বা সহৃদয় ব্যক্তি অর্থনৈতিক সাহায্য করতে এগিয়ে আসে তাহলে বড় মডেল করার ইচ্ছা আছে। এই প্রোজেক্ট কী করে বড় করতে হয় তা দেখিয়ে দেব।’