এই মুহূর্তে




“কিনে দিতে পারি নি বুট”, সন্তোষজয়ী সুপ্রিয়র সাফল্যে গর্বিত ভাগচাষি পিতা




নিজস্ব প্রতিনিধিঃ  কেরলকে হারিয়ে বাংলা জিতল ৩৩তম সন্তোষ ট্রফি। চোখে জল হুগলির প্রৌঢ়ের। স্বামীকে ওই ভাবে কাঁদতে দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি প্রৌঢ়া স্ত্রী-ও। যে ফুটবল খেলার জন্য ছেলে সুপ্রিয়কে এত বকাবকি করেছে, সেই  খেলার জন্যই আজ গর্বিত হুগলির দম্পতি! সন্তোষজয়ী বাংলা দলের সদস্য সুপ্রিয় পণ্ডিতের বাবা কাশীনাথ পণ্ডিত অন্যের জমিতে চাষাবাদ করতেন। ছেলেকে খেলার জন্য বুটও কিনে দিতে পারেননি। ছেলের গর্বে আপ্লুত হয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললেন বাবা।

হুগলির নালিকুলের বন্দিপুর গ্রামের বাসিন্দা সুপ্রিয় পণ্ডিত। এলাকার সকলে তাঁকে চেনে বাবাই নামে। সুপ্রিয়ের বাবা কাশীনাথ পণ্ডিত পেশায় একজন ভাগচাষি। মা কৃষ্ণা সংসার সামলান। ২৮ বছরের সুপ্রিয় বাড়ি ফিরতেই প্রতিবেশী এবং পরিচিতদের ভিড় ছোট্ট বাড়িটিতে। এত মানুষের শুভেচ্ছা এবং ভালবাসায় আপ্লুত এবং গর্বিত সুপ্রিয়ের বাবা। তিনি বলেন, ‘‘অন্যের জমিতে চাষ করে যা উপার্জন হত, তাতে সংসার টানা কঠিন ছিল। ছেলে ফুটবল খেলে বড় নাম করবে, এ ছিল আমার কাছে দিবাস্বপ্নের মতো।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘টাকার অভাবে ছেলেকে সামান্য এক জোড়া বুটও কিনে দিতে পারিনি। খেলার জন্য ওকে বকাবকি করতাম। চেয়েছিলাম পড়াশোনা করে একটি চাকরি করুক।’’

কিন্তু ছোট থেকে সুপ্রিয়ের ফুটবল-প্রীতি। বাবা-মায়ের বকাবকি, শাসন সত্ত্বেও খেলা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। ফুটবলই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। ছোট-বড় টুর্নামেন্টে চুটিয়ে খেলেছেন। দ্বাদশ শ্রেণিতেই পড়াশোনার ইতি। তখন থেকে ফুটবলের মাঠে আরও বেশি করে ঝাঁপিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মায়ের ভাবনাও বদলেছে। এখন তাঁরাই সুপ্রিয়ের অন্যতম সমর্থক।

ডিফেন্সে খেলা সুপ্রিয়ের অবশ্য কোনও ক্ষোভ নেই। সন্তোষ ট্রফি জিতে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা দলের সদস্যদের জন্য চাকরির ঘোষণা করেছেন। এখন ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবের সদস্য সুপ্রিয়ের কথায়, ‘‘কষ্ট করে বাবা মানুষ করেছেন। আর এ বার সন্তোষ ট্রফিতে কঠিন কঠিন দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে। কাশ্মীর, রাজস্থান, তেলঙ্গনার মতো কঠিন টিম ছিল। সেমিফাইনালের লড়াই কঠিন ছিল। তবে প্রতিপক্ষ যতই শক্তিশালী হোক না কেন, আমরাও ছাড়ার পাত্র ছিলাম না। অধিনায়ক চাকু মান্ডি সর্বদা সাহস জুগিয়েছেন। প্রয়োজনে গোলের জন্য বল বাড়িয়েছি, আবার ডিফেন্সে গিয়ে বল আটকেছি।’’ বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে একটা চাকরি করুক। সেটাও সম্ভব হচ্ছে। সুপ্রিয় বলেন, ‘‘বাংলা দলের প্রত্যেক সদস্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরির ঘোষণা করেছেন। এ জন্য তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’’

২০২৪ সাল বাংলা ফুটবলের জন্য বিশেষ বছর। সুপার কাপ, আইএসএল শিল্ড, আইলিগ, আইলিগ তৃতীয় ডিভিশনের পর বছরের শেষে সন্তোষ ট্রফি ঘরে এনেছে বাংলার ফুটবল দল। গত ৩১ ডিসেম্বর কেরলকে ১-০ গোলে হারানো ছিল হুগলির সুপ্রিয়দের কাছে ইচ্ছেপূরণ। 




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

খুনের চেষ্টার অভিযোগে বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের ৩ বছরের কারাদণ্ড

কালনায় হোমে ১০ বছরের ছাত্রের ‘রহস্যমৃত্যু’ ঘিরে চাঞ্চল্য

সাঁইথিয়ায় সরকারি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা!পা পিষে দিয়ে চলে গেল মহিলা যাত্রীর

বামেদের উত্তর কন্যা অভিযানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, রণক্ষেত্রের চেহারা নিল শিলিগুড়ি

চার বছরের প্রেমে ছ্যাঁকা! বারান্দায় ধর্নায় বসে প্রেমিকের বিয়ে আটকালেন তরুণী

খেলার বল নিয়ে বিবাদের জেরেই ৪ বছরের শিশুকে খুন, ডোমজুড়ে গ্রেফতার নাবালক

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর