নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা হাইকোর্টের দুই দফার নির্দেশের পরেও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে(Viswabharati University) অচলাবস্থা কাটছে না। একদিকে পড়ুয়ারা যেমন বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিক্ষোভকারীদের(Student Agitation) সঙ্গে আলোচনায় বসতে বা তাঁদের দাবি মানতে চাইছে না। আর তার জেরেই শুক্রবার থেকে বিশ্বভারতীতে শুরু হওয়া থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা বয়কটের ডাক দিল বিক্ষোভকারীরা। সেই বিক্ষোভের মাঝেই কিছু পরীক্ষার্থী এসেছিলেন পরীক্ষা দিতে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাঁদের আটকাতে গেলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে হাতাহাতি বাঁধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের(Security Workers)। তার জেরে এজন নিরাপত্তারক্ষীর হাত ভাঙে ও ৭জন বিক্ষোভকারী আহত(Injured) হন। আর এই বিক্ষোভের মাঝেই এবারেও আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসব(Basant Utsav) নিয়ে। সম্ভবত এবারেও ঐতিহ্যমণ্ডিত এই উৎসবের আয়োজন করছে না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, পরীক্ষা বয়কটের ডাক দিয়ে এদিন বিক্ষোভকারীরা কলাভবনের সামনে পোস্টার হাতে বিক্ষোভে শামিল হয়। অন্যদিকে শিক্ষা সদনের বেশ কিছু পড়ুয়া সেই সময়েই পরীক্ষা দিতে আসলে আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা তাদের ঢুকতে বাধা দেয়। ফলে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে এক জন নিরাপত্তা কর্মীর হাত ভেঙে যায়। আহত হয় ৭জন বিক্ষোভকারীও। বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা জানিয়েছে, তাঁদের মূলত ৩টি দাবি রয়েছে। এক, অবিলম্বে হস্টেল খুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে ক্লাস নিয়ে অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না এবং তৃতীয়ত, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচি বদল করতে হবে। তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাবেন।
এদিকে দোলের যখন আর মাত্র ১ সপ্তাহ বাকি তখনই সামনে এল শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী বসন্তোৎসব নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা। এখনও পর্যন্ত এই উৎসব আয়োজনের জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। ফলে বসন্তোৎসব আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে আশ্রমিক মহলে। অন্যান্য বছর এই সময়ের মধ্যেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেয়। কিন্তু এ বছর এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ায় বসন্তোৎসব নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। অনেকেই মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের প্রত্যক্ষ অঙ্গুলিহেলনের জেরেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ রবীন্দ্র ঐতিহ্য ধ্বংস করে সেখানে হিন্দুত্বের ধ্বজ্জা তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়েই পাকাপাকি ভাবে বসন্তোৎসব ও পৌষমেলা বন্ধ করে দিতে চাইছে।