নিজস্ব প্রতিনিধি: সরকারি গুদাম থেকে ডিস্ট্রিবিউটর, হোলসেলারদের(Wholesaler) হাত ঘুরে ডিলারদের(Dealer) কাছে পৌঁছনোর আগেই মাঝপথে গায়েব হয়ে গিয়েছে রেশনের(Ration) চাল। বস্তা থেকে ভালো চাল বের করে ঢোকানো হয়েছে নিম্নমানের চাল। অভিযোগ, দিনের পর দিন এমনটা চললেও চোখ বন্ধ করে রেখেছিল রাজ্যের খাদ্য দফতর(Food Department)। তার ফলে পার পেয়ে গিয়েছে অভিযুক্তরাও। খাদ্য দফতরের আধিকারিকরাই এখন জানাচ্ছেন, রেশন-দুর্নীতির(Ration Distribution Scam) তদন্ত ঠিক ভাবে হলে সেই অভিযুক্তরাও আইনের আওতায় চলে আসতে পারে। তাতে জড়িয়ে যেতে পারেন খাদ্য দফতরের কয়েক জন আধিকারিকও। যাঁরা এই অপকর্মে সে সময়ে সাহায্য করেছিলেন। গোটা ঘটনাই ঘটেছিল সাম্প্রতিককালে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED বা Enforcement Directorate’র হাতে গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক(Jyotipriya Mallik) বা বালুর আমলে।
রাজ্যের খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের মাঝামাঝি রাজ্যের বিভিন্ন রেশন দোকানে নিম্নমানের চাল বিলি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ আসতে থাকায় কিছুটা নড়েচড়ে বসেছিল নবান্ন। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো ১৭টি অনুসন্ধানকারী দলও গঠন করা হয়। সব মিলিয়ে ৬৩ জন অফিসারকে সেই তদন্তের কাজে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা জানতে পারেন, সরকারি গুদাম থেকে লরিতে হোলসেলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে রেশনের চাল পাঠানোর সময়েই বস্তা থেকে ভালো চাল বের করে তাতে নিম্নমানের চাল ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মূলত রাতের দিকে কোনও ফাঁকা রাস্তায় লরি দাঁড় করিয়ে এই কাজটা চলছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বড় অপরাধ-চক্র। সেটা জানার পরেই খাদ্য দফতর থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। তাতে জানিয়ে দেওয়া হয়, সন্ধ্যার পর কোনও ভাবেই সরকারি গুদাম থেকে চাল বের করা যাবে না।
চালের পাশাপাশি রেশনে বিলি করা আটার মান ঠিক রাখতে ৯০টি ময়দাকলে একজন করে ইনস্পেক্টরও বসানো হয়েছিল। ভিজিল্যান্স টিমকেও কাজে লাগানো হয়েছিল। তার পরেও অবশ্য এক জন অপরাধীও ধরা পড়েনি। খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সেই সময়ে রেশনে নিম্নমানের চাল উদ্ধার হলেও তার পিছনে যারা যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। যদিও এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েক জন ডিস্ট্রিবিউটর, হোলসেলার এবং ডিলারকে চিহ্নিত করেছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু ওপরতলা থেকে গ্রিন সিগন্যাল না আসায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।