নিজস্ব প্রতিনিধি: বর্ষায় প্রবল বর্ষণের দেখা নেই বাংলায়। তবুও মালদা(Malda) জেলার সদর মহকুমার মানিকচক(Manikchawk) এলাকায় গত সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে গঙ্গার ভাঙনের(Ganga Erosion) কোপ। তার জেরে ইতিমধ্যেই মানিকচক ব্লকের নারায়ণপুর(Narayanpur) এলাকায় শতাধিক পরিবার বাড়িছাড়া হয়েছেন। এই এলাকায় বছর দশেক আগেও ভাঙন দেখা দিয়েছিল। তখন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ইউপিএ সরকার সেই ভাঙন ঠেকাতে গঙ্গার পাড় পাথর দিয়ে বাঁধিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে সেই পাথরের বাঁধনও গঙ্গার দুর্বার স্রোতের মুখে পড়ে কার্যত খড়কুটোর মতো ভেসে যাচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ক্রমাগত ভাঙনে বাঁধের কাছে এসে পৌঁছেছে নদী। পাথর দিয়ে বাঁধানো এলাকা ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। বাঁধ ধসে পড়লে যে কোনও মুহুর্তে লোকালয়ে হু হু করে ঢুকে পড়বে গঙ্গার জল। এই বিষয়ে কেন্দ্র সরকারকে জানানো হলেও তাতে বিন্দুমাত্র নজর দেয়নি মোদি সরকার। শেষে মালদা জেলার মন্ত্রী সাবিনা ইয়াস্মিন ও মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Mamata Banerjee) বিষয়টি জানালে রাজ্য সরকার থেকে তড়িঘড়ি ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
মালদার জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, গঙ্গা ভাঙন সম্পর্কে বারবার কেন্দ্রের কাছে সুরাহা চেয়ে আবেদন জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি। কেন্দ্র মালদা জেলায় গঙ্গা ভাঙন নিয়ে উদাসীন। তবে বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার। বর্ষায় গঙ্গার ভাঙন রোধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ ঘুরিয়ে না থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই সেই ভাঙন ঠাকানোর কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে প্রশাসন এই বাঁধ সংরক্ষণের দিকে নজর না দেওয়ার কারণে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে এখন। নারায়ণপুরের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে গঙ্গা। নদীর তীরবর্তী এলাকা পাথর দিয়ে বাঁধানো হয়েছিল কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন৷ গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ওই পাথর বাঁধানো এলাকায় ধস নামতে শুরু করে। সোমবার তা পুরো তলিয়ে যায় নদীগর্ভে৷ তার প্রেই তীব্র আতঙ্কে থাকা নদীর তীরবর্তী পরিবারগুলি বাড়ির মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে অন্যত্র সরে যেতে তৎপরতা শুরু করে দেন। সেচ দফতরের আধিকারিকরা গোটা এলাকা পরিদর্শন করেছেন ইতিমধ্যেই৷ জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা৷ তবে তাতেও স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের আগুন নেভেনি৷