নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁর নাম ইমরান আলি। একসময় ছিলেন মালদা জেলার চাঁচল মহকুমার রতুয়া-২ ব্লকের আড়াইডাঙা পীরপুর এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি। খেলতে গিয়ে হয়েছিলেন পঙ্গু। তাঁর জীবন যেন এখন প্রশ্নের মুখে। বাঁচতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (CM) চিঠি লিখেছেন তিনি। দলের নেত্রীর ওপরেই ছেড়ে দিয়েছেন নিজের জীবনের দায়িত্ব। না হলে বেছে নেবেন ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’-র পথ।
২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন তৃণমূলের (TMC) বুথ স্তরের দায়িত্বে। জানা গিয়েছে দলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন তিনি। বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতেন সাধারণ মানুষের। রাজনীতির বাইরে ভালোবাসতেন ফুটবল। সেই ফুটবল খেলতে গিয়েই কোমরে আঘাত লাগে ২০১২ সালে। পরিণতি পঙ্গুত্ব। সেই থেকে ইমরান শয্যাশায়ী। প্রায় ৬ বছর ধরে তিনি সাহায্য প্রার্থনা করেছেন ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েত প্রধান সহ একাধিক দফতরে। প্রাপ্যের ঝুলিতে মাত্র একটা হুইল চেয়ার। বলেন, মেলেনি সরকারি সাহায্য। অভিযোগ, দুয়ারে সরকারে আবেদন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডেও হচ্ছে না চিকিৎসা (Treatment)। রেশনকার্ড থাকলেও জোটে না কিছু, অভিযোগ এমনটাই। জানিয়েছেন, যেটুকু সম্বল ছিল তা চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ। ওষুধ কেনার ক্ষমতাও নেই আর। বলেন, এভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যু ভাল। তাই কিছু সুরাহা না হলে যেন ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’র অনুমতি দেওয়া হয়। বাঁচার আকুতি নিয়ে চিঠি দিয়েছেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। ইমরান বলেন, বাঁচার শেষ ভারসা একমাত্র দিদিই।
এই অবস্থাতেও বিপদে অন্য মানুষের আশা হয়ে ওঠেন ইমরান। বিভিন্ন দফতরে চিঠি লিখে দেন তিনি। এইবার বিভিন্ন দফতরে নিজের জন্য চিঠি লিখলেন তিনি। তবে স্বেচ্ছামৃত্যুর। সর্বত্র আবেদন জানিয়ে এখন একমাত্র ভরসা মুখ্যমন্ত্রী। আশা, কেউ না করুক। প্রিয় দিদি নিশ্চয়ই কিছু করবেন।
অতিমারিতে মৃত্যু হয়েছে ইমরানের বাবার। স্ত্রীকে নিয়ে নিঃস্ব অবস্থায় দিন কাটছে তাঁর। সংসার চালানোর ক্ষমতাও আর নেই। ৬ বছর ধরে চোখের জল ফেলেই দিন কাটছে দম্পতির। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কোমরে আঘাত লাগার ফলে পায়ের মাংসপেশি গিয়েছে শুকিয়ে। তাই হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়েছেন তিনি।