নিজস্ব প্রতিনিধি: শাহের শাহি বৈঠকে হাজির ছিলেন তিনি। শাহ ফিরতেই এবার বেসুরো হলেন তিনি। মানে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা জেলারই পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি(Jitendra Tiwari)। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি হাজির ছিলেন অমিত শাহের(Amit Shah) বৈঠকে। অথচ রবি দুপুরে সেই তিনিই কিনা টুইট(Tweet) করে লিখলেন, ‘বাংলা জিততে চান? আসুন, আগে বাংলার মানুষের মন জিতি।’ আর এই টুইট দেখেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে তীব্র জল্পনা। তাহলে কী এবার জিতেন্দ্রও বেসুরো হলেন? আবারও কী তিনি তৃণমূলে(TMC) ফেরার জন্য পা বাড়িয়ে দিলেন? ঘটনার জেরে অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি শিবিরও। তবে জিতেন্দ্র’র টুইটের বক্তব্য যে ভুল সে কথা কিন্তু একবারও বলছেন না কেউ। বরঞ্চ ওয়াকিবহাল মহল বলছে, বিজেপি(BJP) যেভাবে বাংলার দখল নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছে তা আমজনতার সাফ না পসন্দ। বাংলার সভ্যতা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি থেকে শুরু করে বাঙালির উৎসবকেও যেভাবে বিজেপি অপমান করে চলেছে প্রতিনিয়ত তা আর যাই হোক বাংলা বা বাঙালির প্রতি ভালবাসা হতে পারে না। আর যে বিজেপি বাংলা বা বাঙালিকে ভালবাসে না সেই বিজেপিকে বাঙালিরাই বা কেন ভালবাসবে!
তবে জিতেন্দ্র জানিয়েছেন, তিনি বিশেষ কাউকে ইঙ্গিত করে কিছু বলেননি। জিতেন্দ্র এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘কাউকে ইঙ্গিত করে এই কথা বলা হয়নি। এটা আমার ব্যক্তিগত মত। আমরা বাঙালির মন জিততে পারিনি বলেই ভোটে জিততে পারিনি। শাহের সফরের সঙ্গে এই টুইটের কোনও সম্পর্ক নেই। আত্মসমালোচনা যে কোনও সময়েই করা যায়। সত্যিই তো আমরা যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির মন জিততে পারতাম, তবে এমন ফল হত কি? আমিই কি হারতাম? আমি তো দলবিরোধী কিছু লিখিনি। আমার যেটা মনে হয়েছে সেটা টুইটারের মাধ্যমে প্রকাশ করেছি শুধু। এ নিয়ে দলবদলের কথা আসছে কেন? কী করা দরকার সেটাই আমি বলেছি। বলতে চেয়েছি, বাংলার মানুষের মন জয় করতে হবে। এটা আমার মত। কী ভাবে জয় করতে হবে সেটা তো আমার একার ভাবার বিষয় নয়।’
তবে জিতেন্দ্রের এহেন টুইট দেখে অনেকেই মনে করছেন, জিতেন্দ্র সম্ভবত বুঝে গিয়েছেন বাংলায় বিজেপির আর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। একে তো নিজে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পাণ্ডবেশ্বরে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়েও হেরেছেন, তারওপর আসানসোল পুরনিগমের নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী জিতলেও বিজেপি গোহারান হেরেছে। আবার কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি হেরেছে ৩ লক্ষেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে। যে লোকসভা কেন্দ্র পরিবর্তনের পরেও দুটি লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারেনি, এবারে তাঁরা কিন্তু সেই নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। মানুষ বিজেপি থেকে পুরোপুরি মুখ না ফেরালে আসানসোলে এভাবে বিজেপি হারত না, অন্তত ৩ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে। আর এসব দেখে জিতেন্দ্র যদি তৃণমূলে ফিরে আসতেও চান, তাহলেও সেটা অস্বাভাবিক হবে না।