নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুর: জ্বালানির দাম আকাশছোঁয়া। বাইক হোক বা প্রাইভেট কার, ট্যাক্সি হোক বা পাবলিক বাস– যে গাড়িতেই চড়বেন গাঁটের কড়ি গুনতে হয় প্রায় দ্বিগুন। এর থেকে মুক্তি কীভাবে? বিশেষজ্ঞদের মতে ব্যাটারিচালিত গাড়িই নাকি ভবিষ্যৎ। একই মত দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি এলাকার একটি ইলেকট্রিক স্কুটারের শো-রুমের মালিক বিশ্বজিৎ সরকারেরও। তবে ইলেকট্রিক গাড়ির দাম অনেক বেশি। তাহলে? অব্যবহৃত জিনিসপত্র দিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেললেন একটি ব্যাটারিচালিত গাড়ি। যেটা দেখতে অনেকটা জিপগাড়ির মতো।
লকডাউনের দীর্ঘ সময় ব্যবসা বন্ধ ছিল। খুলতে পারেননি শো-রুম। তাই বলে শুধুমাত্র খেয়ে-বসে সময় কাটাননি বিশ্বজিৎ। সময়কে কাজে লাগিয়ে নিজের গ্যারেজে পড়ে থাকা স্ক্র্যাপ লোহা ও টিন-সহ বিভিন্ন অব্যবহৃত সরঞ্জাম দিয়ে তিনি বানিয়ে ফেলেছেন একটি গাড়ি। জিপ গাড়ির মতোই হুডখোলা গাড়ি। বিশ্বজিৎ এই গাড়িটির নাম দিয়েছেন, ‘ভিন্টেজ কার’। এই গাড়িটিই এখন তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। যা নজর কাড়ছে সকলের।
দুর্গাপুর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লী এলাকার বাসিন্দা বছর ৪৫-এর বিশ্বজিৎ সরকার। পড়াশোনা করেছেন বিজ্ঞান নিয়ে। কর্মজীবনের শুরুতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। পরে ওই চাকরি ছেড়ে তিনি ব্যবসা শুরু করেন। ভিড়িঙ্গি এলাকায় নিজের একটি গাড়ির শো-রুম খোলেন। তবে সেখানে শুধুমাত্র ইলেকট্রিক গাড়িই পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটারিচালিত গাড়ি নিয়ে কারবার করার সূত্রে গাড়ির ভেতরের গঠন সম্পর্কেও তাঁর স্পষ্ট ধারনা তৈরি হয়ে গিয়েছে।
বিশ্বজিতের কথায়, ‘আমার বানানো গাড়িটি অনেকটা জিপগাড়ির মতো দেখতে। আপাতত একটিই আসন রেখেছি ড্রাইভারের জন্য। আরও একটি আসন বসানো যাবে। টানা চার ঘণ্টা চার্জ দিলে প্রায় ৬০ কিলোমিটার নিঃসন্দেহে চলে যাওয়া যায়। এই গাড়িটির সরকারিভাবে স্বীকৃতি পেতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছি। দুর্গাপুর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে আলোচনা করেছি।’ তবে ইতিমধ্যেই এই গাড়িটিকে ঘিরে উন্মদনার সৃষ্টি হয়েছে দুর্গাপুরবাসীর মধ্যে। বহু কৌতুহলী মানুষের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে বিশ্বজিৎ সরকারকে। তবে বিষয়টি তিনি উপভোগ করছেন বলেই জানালেন।