নিজস্ব প্রতিনিধি: বাজারচলতি দেখতে। জিম টোনড মোটেও নয়। তাতেই বাজিমাত। প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন মা-মেয়ে। দুইজনই চলে গিয়েছে বিছানায় সেই বাজারচলতি দেখতে যুবকের সঙ্গে। জড়িয়েছে শারীরিক সম্পর্কে। আর সেই সম্পর্কের জেরেই শেষে সেই মা-মেয়ে আর তাদের পরিবার ও চেনাজানাদের হাতেই খুন হতে হয়েছে সেই যুবককে। দক্ষিণ পশ্চিম কলকাতার(Kolkata) হরিদেবপুরের(Haridevpur) যুবক অয়ন মণ্ডলের(Ayan Mondol) খুনের ঘটনায় এখন তাই প্রশ্ন ঘুরছে এলাকাবাসীর মুখে মুখে। কী দেখে এহেন যুবকের ওপর ফিদা হল মা-মেয়ে? বিছানায় ঝড় তোলার জন্য নাকি নেপথ্যে লুকিয়ে আরও কোনও কারণ? উত্তর আপাতত অমিল। তবে পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে ত্রিকোন প্রেমের(Love Trinagle) তত্ত্ব। মা ও মেয়ের সঙ্গে অয়নের। সেই প্রেমের জেরেই দুইজনের সঙ্গে সম্পর্কের ঘণিষ্ঠ ছবি আর ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়েছিল অয়ন। কিন্তু কেন? কোন উদ্দেশ্যে? টাকার জন্য নাকি অন্য কিছু? প্রশ্ন খুঁজছে হরিদেবপুর।
অয়ন সেই অর্থে মোটেও সুপুরুষ নয়। কিন্তু তারপরেও মা ও মেয়ে দুইজনকেই কার্যত ফ্ল্যাট করেছিল সে। আর এখানেই প্রশ্ন, এহেন যুবকের মধ্যে কী দেখে প্রেমে হাবুডুবু খেল মা-মেয়ে। সব জেনে শুনে মেয়ের প্রেমিকের সঙ্গেই বা সম্প্ররকে জড়ালেন মা। মেয়ের বাবা কী বিছানায় সুখ দিতে পারতেন না মেয়ের মাকে, অস্বস্তিকর এই প্রশ্ন মুখে মুখে ঘুরছে হরিদেবপুরে। যদিও আপাতত এই উত্তর দেওয়ার কেউ নেই। কিন্তু মনোবিদ থেকে সমাজতত্ত্ববিদ সকলেই বেশ উদ্বিগ্ন এই ঘটনা নিয়ে। কেননা তাঁদের দাবি, অয়ন নিজে থেকেই মা ও মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল। তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের ছবি ও ভিডিও তুলেছিল। পরে সেই ভিডিও ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল শুরু করেছিল। এই মনোভাব এখনকার অনেক যুবকের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে যা অতি বিপজ্জনক। লোকলজ্জার ভয়ে অনেকেই ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়ে ঘটিবাড়ি সোনাদানা বিক্রি করে টাকা মেটাচ্ছেন। অনেকে আবার এই ঘটনায় খুনও হয়ে যাচ্ছেন, যেমনটি ঘটেছে অয়নের সঙ্গে। এই বিপদের কথা কেন ভাবছে না নয়া প্রজন্ম! ভাবাচ্ছে মনোবিদ থেকে সমাজতত্ত্ববিদদের। ভাবাচ্ছে জেনেশুনে মেয়ের প্রেমিকের সঙ্গেই বা কেন সম্পর্কে জড়ালেন মা, সেই বিষয়টিও।
সমাজতত্ত্ববিদ ও মনোবিদরা উদ্বিগ্ন অয়নের বাবার কথা শুনেও। অয়ন মণ্ডলের বাবা আগেই বলেছিলেন, ‘অয়নকে ভালোবাসত তাঁর বান্ধবী এবং বান্ধবীর মা দু’জনেই। অয়নের বান্ধবীর বাবা জেনে যায় যে আমার ছেলের সঙ্গে ওঁর স্ত্রীর সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে। মেয়ের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সে ভেবেছিল যে আমার ছেলেকে মেরে দিলে সংসারে সুখ ফিরবে। এই কারণেই খুন করা হয়েছে অয়নকে। মা-ও আমার ছেলেকে ভালোবাসত, মেয়েও আমার ছেলেকে ভালোবাসত। আমার ছেলে কী করবে?’ কার্যত গোটা বাংলা চমকে গিয়েছে এই কথা শুনে। বাবা হয়ে ছেলের এই অধ্বঃপতন কীভাবে মেনে নিলেন তিনি? ছেলে ভুল পথে হাঁটছে জেনেও কীভাবে তাতে সায় দিলেন? সব জেনেও কীভাবে চুপ করে ছিলেন? আর এখন কীভাবেই বা নিজের ছেলেকে নির্দোষ বলে দাবি করছেন? এই প্রবণতা ও মানসিকতা রীতিমত বিপজ্জনক যে কোনও পরিবারের কাছে, সমাজের কাছে।