নিজস্ব প্রতিনিধি: নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনাকে ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সেই দুর্নীতির ঘটনায় যারা জড়িত তাঁরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে OMR Sheet-এ কারচুপি করে প্রকৃত যোগ্যদের বঞ্চিত করে চাকরি তুলে দিয়েছে অযোগ্যদের হাতে। কিন্তু আগামি দিনে যাতে এই ধরনের ঘটনার যাতে আর কোনও রকমের পুনঃরাবৃত্তি হয় তার জন্য এবার নড়েচড়ে বসল Public Service Commission বা PSC। অর্থাৎ আগামী দিনে যাতে আর কোনওভাবেই OMR Sheet বিকৃত করা না যায় সেই পথেই হাঁতা দিয়েছে PSC। আর তার জন্য PSC’র তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা OMR Sheet’র প্রস্তুতি, সরবরাহ ও সেগুলি মূল্যায়ণের দায়িত্বে থাকছে, তার কাজের গুণগত মান ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার মানবসম্পদের বিশ্বাসযোগ্যতার মূল্যায়ণে নয়া শর্ত হিসাবে চিহ্নিত হবে।
আরও পড়ুন বন্ধ হতে পারে বাংলার সাড়ে ৫ লক্ষ প্রবীণের বার্ধক্য ভাতা
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় সামনে এসেছে যে School Service Commission বা SSC যে পরীক্ষা নিয়েছিল সেই পরীক্ষায় ব্যবহৃত OMR Sheet’র কারচুপি ঘটিয়েছিল সেই শিট সরবরাহকারী সংস্থা ND Infosystems Private Limited। এই সংস্থাটিই গত এক বছর ধরে PSC’র নিয়োগ পরীক্ষাগুলিতে OMR Sheet সরবরাহ ও মূল্যায়নের দায়িত্বে ছিল। সংস্থাটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর নীলাদ্রি দাস শিক্ষক-অশিক্ষক নিয়োগে OMR Sheet’র কারচুপির দায়ে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেই PSC সংস্থাটিকে বাদ দেওয়ার কাজ শুরু করে। এর জেরে নয়া তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা বাছাইতে গত ৮ এপ্রিল কমিশন যে টেন্ডারের নোটিশ দিয়েছিল, উনিশ তারিখ তারই সংশোধনীতে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে নয়া শর্তগুলি আরোপ করা হয়েছে। যেমন, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে ১০৫ জিএসএম (গ্রামস পার স্কোয়ার মিটার) পুরু ওএমআর শিটগুলির কাগজের গুণাগুণ সংক্রান্ত শংসাপত্র প্রয়োজনে ল্যাব টেস্ট করে জমা দিতে হবে। অন্যথায়, ওএমআরের সঠিক মূল্যায়ন না হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সংশ্লিষ্ট সংস্থা আগে যেসব জায়গায় নিয়োগের দায়িত্ব সামলেছে, সেখান থেকে কাজ ১০০ শতাংশ সম্পন্ন করার ‘ওয়ার্ক কমপ্লিশন সার্টিফিকেট’ আনতে হবে।
আরও পড়ুন ‘আইনস্টাইনের বহু আগেই আমরা বলেছি’, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষের মন্তব্যে বিতর্ক
শুধু কাজের বরাত পাওয়ার ওয়ার্ক অর্ডারে চলবে না। দুর্নীতি ঠেকাতে ওএমআর মূল্যায়নের ‘গোপন’ কাজে নিয়োজিত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার মানবসম্পদের প্রত্যেকের সম্পর্কে শংসাপত্র জমা দিতে হবে যে, কারও আত্মীয়-পরিজন ওই নিয়োগ পরীক্ষায় বসছেন না। এই ধরনের সংস্থার গত পাঁচ বছরে এক-একটি নিয়োগ পরীক্ষায় ১ লাখেরও বেশি ওএমআর স্ক্যান করে মূল্যায়নের অভিজ্ঞতাও বিচার্য শর্ত। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে প্রতি জেলায় প্রতিটি পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের জন্য আলাদা করে সিলবন্দি প্যাকেট ঠিকানা সহ পাঠাতে হবে। বলা ভাল, আংশিক টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই এনডি ইনফোসিস্টেমসে দায়িত্ব নেওয়ার আগে ‘ডাটাটেক’ নামে যে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা কমিশনে ওএমআর সরবরাহ ও মূল্যায়নের কাজ করত, তা-কেই ওয়েস্ট বেঙ্গল জুডিশিয়াল সার্ভিসের(West Bengal Judisial Service) ২০২২-এর প্রিলিমিনারির ওএমআর দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ, অভিযুক্ত সংস্থাটি বিদায় নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষার লাখ তিনেক ওএমআর মূল্যায়ণের কাজ এখনও বাকি রয়েছে।