নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) গরিব ঘরের মেধাবী পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ যাতে টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে না যায় তার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) চালু করেন Student Credit Card। ২০২১ সালের ৩০ জুন মুখ্যমন্ত্রী এই কার্ড চালু করেন যেখানে রাজ্যের স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী পড়ুয়ারা আবেদন জানালে উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণ পাবে ব্যাঙ্ক থেকে। বাৎসরিক মাত্র ৪ শতাংশ সুদে এই কার্ডের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মেলে। প্রয়োজনে রাজ্য সরকার সেদের ক্ষেত্রে আরও ১ শতাংশ ছাড় দিতে পারে। সেই ঋণ মেলার ১৫ বছর পর্যন্ত সুদ সহ ঋণ পরিশোধের সময় দেওয়া হয়। সব থেকে বড় কথা এই ঋণের জন্য কোনও গ্যারেন্টার যেমন লাগে না তেমনি জমি-বাড়ি-অর্থ বন্ধক হিসাবে রাখতে হয় না। এখানে রাজ্য সরকারই সেই পড়ুয়ার হয়ে গ্যারেন্টারের ভূমিকা পালন করে। তা সত্ত্বেও বার বার অভিযোগ উঠেছে যে রাজ্যের মেধাবী পড়ুয়ারা সেই কার্ড হাতে পেয়ে ঋণের জন্য আবেদন জানালেও তাতে সাড়া দিচ্ছে না সরকারি ব্যাঙ্কগুলি। এমনকি পড়ুয়ার আবেদন রাজ্য সরকার মঞ্জুর করার পরেও তাঁদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে না। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার প্রকাশ্যেই ব্যাঙ্কগুলির ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন। কিন্তু তাতেও যে কাজ হচ্ছে না সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে হাওড়া জেলার(Howrah District) উলুবেড়িয়া মহকুমার আমতার(Aamta) বাসিন্দা মিখাইল আলমের(Mikhail Alam) ঘটনা।
২০১৯ সালে ডাক্তারি পড়ার জন্য ইউক্রেনে পাড়ি দিয়েছিলেন মিখাইল। কিন্তু রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২২ সালে মাঝপথে তাঁকে দেশে ফিরে আসতে হয়। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় দেশে ফেরা পড়ুয়াদের পাশে দড়িয়ে রাজ্যেই তাঁদের পড়াশুনার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এমনকী পড়াশুনায় সাহায্যের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে Student Credit Cardর মাধ্যমে ঋণ প্রদানের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। সেইমত সকলের মতো আশায় বুক বেঁধেছিল মিখাইলও। ঋনের আবেদন জানানোর পর ২০২২ সালের শেষের দিকে ফের ইউক্রেনে ফিরে যায় সে। যাওয়ার আগে Student Credit Card’র মাধ্যমে সে ৮ লক্ষ টাকা ঋণের জন্য আবেদনও জানিয়েছিল। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর মিখাইলের সেই আবেদন মঞ্জুরও করে দেয়। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে এসে সেই ঋন আটকে যায়। মিখাইলের বাবা নাসিরউদ্দিন জানিয়েছেন, ‘ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল ব্যাঙ্কে গিয়ে ছেলেকে স্বাক্ষর করলে তবেই ঋণের টাকা মিলবে। সেইমত ছেলেকে খবর পাঠিয়ে ২ মাসের জন্য দেশে আনিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাঙ্কের গড়িমাসির জন্য এখনও পর্যন্ত ঋন পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ইউক্রেনে নিজের পড়াশোনাও শেষ করতে পারছে না মিখাইল। এখন অনলাইনে পড়াশোনা করলেও প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করতে না পারায় আদতে ক্ষতি হচ্ছে।’