নিজস্ব প্রতিনিধি: বৃহস্পতিবার সকালেই রাজ্য পুলিশের তরফে শেখ শাহজাহানের(Sheikh Shahjahan) গ্রেফতারির(Arrest) কথা সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে। আর সেই গ্রেফতারি নিয়ে বিরোধী দলগুলি তাঁদের আন্দোলনের কৃতিত্বকে তুলে ধরতেই পাল্টা মাঠে নেমে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। তাঁদের দাবি, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Abhishek Banerjee) জন্যই শাহজাহান গ্রেফতার হয়েছেন। কেননা তিনিই জানিয়েছিলেন, কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court) শাহজাহানের গ্রেফতারিতে পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে। নিজের বক্ত্যব্যের স্বপক্ষে কলকাতা হাইকোর্টের প্রদেয় নির্দেশের কপিও নিজের ট্যুইটে তুলে ধরেন। আর তারপর পরেই দেখা যায় কলকাতা হাইকোর্টও জানিয়ে দেয় যে, শাহহাজানের গ্রেফতারিতে কোনও বাধে নেই। রাজ্য পুলিশ বা গোয়েন্দা বাহিনী কিংবা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যে কেউ তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে।
এদিন শাহজাহান গ্রেফতার হতেই সেই কৃতিত্ব অভিষেকের ঝুলিতে তুলে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যস্তরের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং জাতীয়স্তরের মুখপাত্র সাকেত গোখেল। এদিন কুণাল ২টি ট্যুইট করেছেন। একটিতে লিখেছেন, ‘রাজ্য পুলিশ তো কাজ করল। এবার সিবিআই নারদ মামলায় CBI FIR NAMED শুভেন্দু অধিকারী এবং আলকেমিস্ট চিট ফান্ডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর মিঠুন চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করুক। এবার মহিলা কুস্তিগীরদের সঙ্গে অসভ্যতার নায়ক ব্রিজভূষণ গ্রেফতার হোক। এবার দেশের ব্যাঙ্ক লুঠেরাদের ধরুক ED।’ অপর একটি ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, ‘আদালতের বাধা ছিল, পুলিশ কাজ করতে পারেনি। @abhishekaitc-র সৌজন্যে আদালত বাধা সরিয়েছে। পুলিশ যা করার করেছে।’ পরে কুণাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, ‘আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছিলেন, মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের একটি অংশের জন্যই পুলিশের হাত-পা বাঁধা হয়ে গিয়েছে। পুলিশ এ সংক্রান্ত মামলায় কোনও পদক্ষেপ করতে পারছে না। অভিষেক বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার পর আদালত সেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে এবং পুলিশকে কাজ করার ছাড়পত্র দেয়।’
আবার সাকেত ট্যুইট করে লিখেছেন, ‘আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সঠিক ভাবেই চিহ্নিত করেছিলেন, হাইকোর্টের নির্দেশের জন্য পুলিশ আটকে যাচ্ছে। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম যে, হাইকোর্ট পুলিশের হাত খুলে দিলে, কয়েক দিনের মধ্যেই শাহজাহান শেখ গ্রেফতার হবেন।’ উল্লেখ্য অভিষেকও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, শাহজাহান কান্ডে আদালতই পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে। না হলে রাজ্য সরকারের পুলিশ শাহজাহানকে অনেক আগেই গ্রেফতার করতে পারে। বলেছিলেন, ‘শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। ED তাঁকে ধরতে পারেনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গিয়ে রাজ্য পুলিশের ওই FIR’র বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেয়েছে। ফলে পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে আদালতই।’ গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারবে রাজ্যের পুলিশ। কোনও স্থগিতাদেশ তাতে দেওয়া হয়নি। আদালতের সেই বক্তব্যের ৭২ ঘন্টার মধ্যেই দেখা গেল রাজ্য পুলিশের হাতেই গ্রেফতার হয়েছেন শাহজাহান। আর সেই ঘটনায় রাজ্য পুলিশের এডিজি(দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার সাংবাদিক বৈঠকে এদিন প্রশ্ন তুলেছেন, রাজ্য পুলিশের ওপর নয় শাহজাহানের গ্রেফতারির ওপর আদালতের নির্দেশনামা কার্যকর ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ক্ষেত্রে তো এইরকমের কোনও বাধা ছিল না। তাহলে এতদিন ধরে ED কেন শাহজাহানকে গ্রেফতার করেনি!