নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা ও নবদ্বীপ: বড় বিস্ময় জাগে।আজ এই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে এসেও আমাদের এই নবদ্বীপ শহরে এমন দৃশ্য দেখতে হচ্ছে? একেই কি বলে প্রদীপের নিচে অন্ধকার? কিন্তু না এই প্রশ্নবাণ গুলিকে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এই মুহূর্তের কাছে এই সংবাদটি আসার পর সেটিকে প্রকাশ করার আগে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল যদি ওই একরত্তি মেয়েটির বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া যায়। ‘এই মুহূর্তের’ সেই অনুরোধে সারা দেয় বিদ্যুৎ দফতর। রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের(Minister Arup Biswas) নির্দেশে রবিবার রাতের মধ্যে ওই বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত এই মহতী কাজ সম্পন্ন করার জন্য রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তর কে সাধুবাদ জানায় এই মুহূর্ত। এবার আসা যাক ঘটনাটা কি ঘটেছিল সেই তথ্যে। এই মুহূর্তের সাংবাদিক সুব্রত রায়ের কাছে একটি প্রতিবেদন আসে তা হল—
চারিদিকে আলোর রোশনাইয়ের বিপ্রতীপে এখনও হতদরিদ্র একটি পরিবারের বাড়িতে পৌঁছায়নি বিদ্যুতের আলো। অগত্যা পড়াশোনার জন্য রাস্তার আলোকেই বেছে নিতে হল নবদ্বীপের ছোট্ট একটি মেয়েকে। নটা বছর পার করে ১০ বছরে পা দিয়ে এখনও বিদ্যালয়ের মুখ দেখেনি প্রিয়াঙ্কা। মূক ও বধির মাকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তার আলোকে সে বেছে নিল পঠন পাঠনের স্থান হিসেবে। পথের ধারে রাস্তার আলোতেই খাতা কলম নিয়ে চলছে আঁকি বুকি।ঘড়ির কাঁটা তখন এগারোটা ছুঁই ছুঁই। প্রিয়াঙ্কা নির্বিকারভাবে এক মনে খাতায় এঁকে চলেছে বিভিন্ন ড্রইং। এমনই এক করুণ দৃশ্য চোখে পড়ল চৈতন্যভূমি নবদ্বীপের ব্যস্ততম এলাকা হীরালাল পাল রোডে। জানা গিয়েছে, নবদ্বীপ পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই শিশু কন্যার নাম প্রিয়াঙ্কা ঘোষ(Priyanka Ghosh)। বাবা অসুস্থ। মা মূক ও বধির। এ হেন পরিস্থিতিতে পড়াশোনার ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। দুমুঠো অন্ন যোগাতে মায়ের সঙ্গে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়তে হয় এই নবদ্বীপ ধাম শহরের বিভিন্ন প্রান্তে।
সারাদিন চেয়ে চিন্তে যা জোটে, তাতেই চলে তিন জনের সংসার। আর আঁকিবুকি? রাস্তার আলোতেই কি শেষ হয়ে যাবে এই বাচ্চা মেয়েটির ভবিষ্যৎ? কিন্তু সেই মেয়েটিকে অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দিল না রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতর। সাংবাদিকতায় দীর্ঘদিন যুক্ত থাকা, সুব্রত রায় আগাম খবরটি করে সমালোচনার ঝড় না তুলে রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করে সেই বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর পর সংবাদটি প্রকাশ করে। উদ্দেশ্য ছিল চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করার। আশা করি, পাঠকরা এই প্রতিবেদন পড়ে একজন ক্ষুদ্র সাংবাদিক হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করেছি কিনা তা জানাবেন।একইসঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রিয়ঙ্কার পরিবারও রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। আগামী জীবনে ছোট্ট প্রিয়াংকার জন্য রইল ‘এই মুহূর্তের’ পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।