নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: দেশের শাসকদলের এক সাংসদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে রাস্তায় নেমে বুক চিতিয়ে আন্দোলন করেছিলেন। রাজধানীর বুকে আন্দোলন করতে গিয়ে অমিত শাহের অধীনস্ত দিল্লি পুলিশের লাঞ্ছনা ও নির্যাতনও জুটেছিল। হুমকিও এসেছিল ক্ষমতাশালী মহল থেকে। যদিও কোনও হুমকির মুখে মাথানত না করে বুক চিতিয়ে লড়াই চালিয়েছিলেন অলিম্পিকে পদকজয়ী কুস্তিগীর সাক্ষী মালিক। আর সেই লড়াইয়ের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বজুড়ে ১০০ জনের প্রভাবশালী তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছেন বীরাঙ্গনা সাক্ষী।
ভারতীয় কুস্তি সঙ্ঘের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিজেপির বাহুবলী সাংসদ ব্রিজভূষণ শরন সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন সাক্ষী মালিক-ভিনেশ ফোগত ও বজরং পুনিয়ার মতো কুস্তিগীররা। ওই অভিযোগ ঘিরে গোটা দেশ উত্তাল হয়েছিল। দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং শাসকদলের সাংসদের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিলেন দেশকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে গর্বিত করা তিন কুস্তিগীর। সাক্ষীদের চাপের মুখে খানিকটা হলেও নড়েচড়ে বসেছিল ক্রীড়া মন্ত্রক। কুস্তি সঙ্ঘের নির্বাচনে ব্রিজভূষণের লড়াইয়ের উপরে জারি হয়েছিল প্রতিবন্ধকতা। যদিও বাহুবলী বিজেপি সাংসদ নিজের ঘনিষ্ঠ অনুগামী সঞ্জয় সিংকে সভাপতি পদে বসিয়ে সংস্থা কুক্ষিগত রাখতে সফল হয়েছেন। জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি পদে ব্রিজভূষণ ঘনিষ্ঠ সঞ্জয়ের নির্বাচিত হওয়ার প্রতিবাদে দেশের হয়ে আর প্রতিনিধিত্ব না করার মতো ঐতিহাসিক ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাক্ষী মালিক।
তাঁর ওই দৃড়চেতা মনোভাবকেই কুর্নিশ জানিয়েছে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন। ২০২৪ সালে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যাক্তির তালিকায় ঠাঁই দিয়েছে সাক্ষীকে। টাইম ম্যাগাজিনের ওই সম্মান পেয়ে ভীষণ আপ্লুত অলিম্পিকে পদকজয়ী কুস্তিগীর। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাক্ষী বলেছেন, ‘আমরা শুধুমাত্র মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন করিনি। আমাদের আন্দোলন ছিল দীর্ঘদিন ধরে মেয়েদের সঙ্গে চলা আসা যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে। এতদিন সবাই মুখ বুজে ওই হেনস্থা হজম করেছেন। সময় এসেছে গর্জে ওঠার। একজন নাগরিক হিসাবে আমি আমার দায়িত্বটুকু পালন করেছি।’