নিজস্ব প্রতিনিধি: কঠিন লড়াই ছিল। অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন ছিল। সেই লড়াইয়ে কতখানি সাফল্য এল সেটা বিতর্ক স্বাপেক্ষ। কিন্তু যেটা ঘটল তা হল মানরক্ষা। আর সেই মানরক্ষার মূলে রইল সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের সমর্থন। নজরে কংগ্রেস। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম বাংলার বিধানসভা কংগ্রেসহীন। সেই প্রেক্ষাপটেই এবারে নানা মহলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল কলকাতা পুরনিগম থেকেও না কংগ্রেস হারিয়ে যায়। নাহ, সেই ঘটনা ঘটেনি। মানরক্ষা হয়েছে দেশের শতাব্দী প্রাচীন এই জাতীয় রাজনৈতিক দলটির। আর যে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক একসময় এ রাজ্যে কংগ্রেসের নিজস্ব ভোট ছিল সেই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কই কার্যত এবারে পুরনির্বাচনে কংগ্রেসের মানরক্ষা করেছে।
২০১৫ সালে কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনে কংগ্রেস ৫টি আসনে জয়ী হয়েছিল। তার মধ্যে এবারে ৪টি আসনই হারিয়ে ফেলেছে কংগ্রেস। কেবলমাত্র সন্তোষ পাঠক তাঁর আসনটি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। বাড়তি আসন হিসাবে এসেছে ১৩৭ নম্বর ওয়ার্ডটি। একই সঙ্গে শহরের ১৬টি আসনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে কংগ্রেস। এই ১৬টি আসনের মধ্যে ৪টি আগে কংগ্রেসের দখলেই ছিল। সেই হিসাবে দেখতে গেলে ১২টি ওয়ার্ডে নতুন করে কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। লক্ষ্যণীয় বিষয় যে ২টি আসনে কংগ্রেস জয়ের মুখ দেখেছে বা যে ১৬টি ওয়ার্ডে তাঁরা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সবকটিই কিন্তু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা। সেই হিসাবে দেখা যাচ্ছে যে সংখ্যালঘু ভোট একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হারিয়ে ফেলে রাজ্য বিধানসভা থেকে কংগ্রেস বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল সেই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কই এবারে কংগ্রেসের মান বাঁচিয়েছে। অর্থাৎ শূন্য থেকে ঘুরে দাঁড়াবার জন্য কিছুটা অক্সিজেন কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচন থেকে পেয়েই গেল সোনিয়া গান্ধি ও রাহুল গান্ধির দল। আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেস বিরোধী পরিসরে কতখানি জায়গা ফিরে পায় সেটা দেখার অপেক্ষায় রইল বঙ্গবাসী।