নিজস্ব প্রতিনিধি: সংসদীয় গণতন্ত্রে ভোটে দাঁড়ানো কী অপরাধ? নাকি জনতার সমর্থন নিয়ে জেতাটা অপরাধ? এই দুই প্রশ্নই এখন মুখে মুখে ঘুরছে কলকাতার কংগ্রেসকর্মীদের মধ্যে। কেননা এবারের পুরনির্বাচনে কংগ্রেসের যে দুই প্রার্থী জয়ের মুখ দেখেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হল ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সন্তোষ পাঠক। এবার তাঁকেই পুলিশ নোটিস পাঠালো। হাওড়া শহরের শিবপুর এলাকার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী চলতি বছরের অক্টোবর মাসে খুন হন তাঁর গ্রামের বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না থানার দরিয়াপুর গ্রামে। সেই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসাবেই সন্তোষ পাঠককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অধীনস্থ শিবপুর থানার পুলিশ ওই নোটিস পাঠিয়েছে। তবে সেই নোটিস পাঠানো হয়েছে কংগ্রেস কাউন্সিলরের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে। যা দেখে সন্তোষ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নোটিস পেলেও থানায় হাজিরা দেবেন না। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে যা করার তা যেন করে নেয়।
গত অক্টোবর মাসে দরিয়াপুরে নিজেদের গ্রামের বাড়িতেই নৃশংস ভাবে খুন হন শিবপুরের নবীন সেনাপতি লেনের বাসিন্দা তথা পেশায় ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল। সেই ঘটনার আগে সেপ্টেম্বর মাসেও তাঁকে হাওড়ার বাড়িতে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে। কিন্তু সে যাত্রায় বেঁচে গেলেও দরিয়াপুরে আর প্রাণে বাঁচতে পারেননি ওই ব্যবসায়ী। কার্যত সেদিন তাঁকে সুপারি কিলার দিয়ে খুন করা হয়েছিল। পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমেই সব্যসাচীবাবুর কাকা গৌরহরি মণ্ডল এবং তার দুই ছেলে সোমনাথ ও দিনবন্ধুকে গ্রেফতার করে। কেননা অভিযোগ উঠেছিল সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনায় সম্প্রতি পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে সুপারি কিলার জানিসার আলম ওরফে রিকিকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সব্যসাচী মন্ডলকে খুনের জন্য তাকে ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল। যদিও সে হাতে পেয়েছিল মাত্র ৫০ হাজার টাকা। বড়বাজারের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি নাকি সেই সুপারি দিয়েছিলেন।
পুলিশের দাবি, সব্যসাচী মণ্ডলের খুনের ঘটনায় তদন্তে নেমে সন্তোষ পাঠকের নাম উঠে এসেছে। তিনি এই ঘটনার সঙ্গে কিভাবে জড়িত তা জানতেই তাঁকে এর আগে এই ঘটনায় ২বার নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কোনওবারই তিনি থানায় হাজিরা দেননি। এখন নতুন করে আবারও তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। যদি তিনি এবারেও হাজিরা না দেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। প্রয়োজনে ওয়ারেন্টও জারি করা হতে পারে। যদিও কংগ্রেস কর্মীদের দাবি, পুরভোটে সন্তোষ পাঠককে হারাতে না পারার জন্য এখন তাঁকে জেলে ঢোকাতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। তার জন্যই এই নোটিস পাঠানো হয়েছে ও ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় সন্তোষের নাম জড়ানো হচ্ছে।