নিজস্ব প্রতিনিধি: দলের অন্দরের বিক্ষোভ যাতে আর সংক্রমিত না হয়, তার জন্য বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথেই হাঁটলেন বঙ্গ বিজেপির নয়া মুখিয়া সুকান্ত মজুমদার। সোমবার রাতেই দুই বিদ্রোহী নেতা রীতেশ তিওয়ারি ও জয়প্রকাশ মজুমদারকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। শোকজের জবাব দেওয়ার আগেই দলের কড়া শাস্তি নেমে আসায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা রীতেশ তিওয়ারি। তাঁর কথায়, ‘দলের গঠনতন্ত্র না মেনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলের অন্দরে যে বড় ষড়যন্ত্র চলছে তা প্রমাণ হলো। চাইলে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে পারে। তাতে কিছু যায় আসে না। এমন জায়গায় নিয়ে যাব, যাঁরা আজ শাস্তি দিয়েছে, একদিন পা ধরে ক্ষমা চেয়ে দলে ফেরাবে।’ সে্ই সঙ্গে হুঙ্কার ছেড়ে বলেছেন, ‘যাঁরা আজ দলকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে, তাঁদের কুকীর্তি ফাঁস করব।’
গত ডিসেম্বর মাসে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাজ্য কমিটির পদাধিকারী ও জেলা সভাপতির নাম ঘোষণার পরেই দলের অন্দরে বিক্ষোভের আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে পুরুলিয়া পর্যন্ত বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একের পর এক বিধায়ক ও নেতা দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান। শুধু তাই নয়, রাজ্য নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে পাল্টা মঞ্চ গড়ার দিকেও এগিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
বিদ্রোহ যাতে অন্য জেলায় সংক্রমিত না হয়, তার জন্য শনিবারই বিক্ষুব্ধ শিবিরের দুই নেতা রীতেশ তিওয়ারি ও জয়প্রকাশ মজুমদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরানো হয়। শুধু তাই নয়, সোমবার বিকালেই দুই নেতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
এদিন সন্ধ্যাতেই কলকাতার একটি বাংলা টিভি চ্যানেলে দলের কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের পর দলে আসা চার-পাঁচজন নেতা দলকে হেয় করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। রাজ্য নেতৃত্বকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করার ফল হাতেনাতেই পেয়ে যান তিনি। রাজ্য বিজেপির কার্যালয় সম্পাদক প্রণয় রায়ের স্বাক্ষরিত করা চিঠিতে বলা হয়, ‘রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশ অনুসারে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত রীতেশ তিওয়ারি ও জয়প্রকাশ মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে।’