নিজস্ব প্রতিনিধি: সিবিআই তলব করেছিল ৩ মামলাকারীকে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দূর্নীতি মামলাকারীরা এসেছিলেন নিজাম প্যালেসে। সোমবার সকালে সিবিআই দফতরে এসে সমস্ত নথি জমা দেন তাঁরা। সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে উপস্থিত হয়েছিলেন তাঁরা। উপস্থিত ছিলেন দীপঙ্কর মান্না, অনিন্দিতা বেরা এবং মিলন দাস। তাঁদের জমা দেওয়া নথির মধ্যে রয়েছে অঙ্কিতা অধিকারী নিয়োগ দূর্নীতি মামলাও।
জানা গিয়েছে, এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ডেকেছিল নবম ও দশম শ্রেণি নিয়োগে মামলাকারী এবং গ্রুপ ডি নিয়োগে মামলাকারীদের। নবম ও দশম শ্রণির নিয়োগের মামলাকারী ছিলেন ববিতা সরকার এবং অনিন্দিতা বেরা। গ্রুপ ডি নিয়োগের মামলাকারী ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। তবে উপস্থিত হননি সাবিনা। জানা গিয়েছে, বুধবার সিবিআই দফতরে উপস্থিত হতে পারেন ববিতা। জানা গিয়েছে, অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ তা বিস্তারিত ভাবে জানতে চাইবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
উল্লেখ্য, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, অঙ্কিতা অধিকারীকে ফেরত দিতে হবে স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে আয় করা সমস্ত টাকা। সেই সঙ্গে বরখাস্ত করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই টাকা ১ বা ২ মাসের নয় টানা ৪১ মাসের। নেহাত কম নয় সেই টাকার পরিমাণ। গত ২০১৮ সালের নভেম্বরে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বেতনের বেসিক ছিল ১৫ হাজার ৯৬০ টাকা। ১৫ শতাংশ এইচআরএ। মেডিক্যালে বরাদ্দ ছিল ৩ শতাংশ। মোট বেতন ছিল ৩৮ হাজার ৬০৪ টাকা। ১ বছরে তাঁর বেতন বেড়ে হয়েছিল ৪৯ হাজার ৪৯০ টাকা। মানে টানা ৪১ মাসের বেতন মিলিয়ে সেই টাকার পরিমাণ ২০ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা। সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ২ টি কিস্তিতে। রাষ্ট্র বিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেওয়া অঙ্কিতার প্রতি বিচারকের নির্দেশ আগামী ৭ জুনের মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় কিস্তি মিটিয়ে দিতে হবে আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে। কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে সেই টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারকের নির্দেশ, আর স্কুল চত্বরে ঢুকতে পারবেন না, তিনি বা তাঁর প্রতিনিধি। নিজেকে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবেও পরিচয় দিতে পারবেন না তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২ দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে এসএসসি (SSC) দফতর থেকে একাধিক নথি, ফাইল, হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। উল্লেখ্য, এই প্রথম এসএসসি ভবন থেকে নথি বাজেয়াপ্ত করল সিবিআই (CBI)। কয়েকদিনের মধ্যেই সমস্ত নথি দেওয়া হবে ইডিকে, সূত্রের খবর এমনটাই। সিল করা রুম থেকেই এই সমস্ত নথি উদ্ধার করা হয়েছে। শনি ও রবিবার জুড়ে চালানো হয় তল্লাশি। উল্লেখ্য সিবিআইয়ের কাছ থেকে তদন্তের নথি চেয়ে চিঠি দিয়েছিল ইডি।
সূত্রের খবর, প্রায় ৮- ১০ টি হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তা পাঠানো হবে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য। এসএসসি নিয়োগ দূর্নীতিতে আদালতের নির্দেশে তদন্তে নেমেছিল সিবিআই। পরে এই মামলায় হস্তক্ষেপ করে ইডি। সিবিআই তদন্তের যাবতীয় নথি চেয়ে ইডির পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়। ইডির (ED) দাবি, বহু কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। সূত্রের খবর, চাওয়া হয়েছে এফআইআরের ৪ টি কপি এবং সমস্ত নথি। অভিযোগ, চাকরির বিনিময়ে বহু কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছিল। সেই টাকা কোথায় পৌঁছেছে তার সন্ধানে ইডি।