নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতায় এসে মিঠুন চক্রবর্তী (MITHUN CHAKRABORTY) সোজা গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির (BJP) সদর দফতরে। বলেছিলেন, কেন্দ্র বিজেপি তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছে তা সামলাবেন তিনি। নির্বাচনে বিজেপির হারের দীর্ঘ দিন পর তাঁকে ফের দেখা রাজনীতির ময়দানে। এই প্রসঙ্গে অভিনেতা অবশ্য জানিয়েছিলেন, তিনি অসুস্থ ছিলেন। তবে এবারে কী তাঁর ভূমিকা, তা বলতে চাননি মিঠুন। কলকাতা আসার প্রথম দিনে তাঁর মুখ থেকে আনন্দ ঝরে পড়লেও বৈঠকে দেখা গেল হতাশা।
বিজেপির ফল প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, গেরুয়া শিবিরের ফলে তিনি খুশি। আগে ৩ শতাংশ ছিল। তা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৭ শতাংশ। এতে তিনি যথেষ্ট খুশি। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে তাঁর গলায় ঝরে পড়েছিল হতাশা। দলের সমর্থন কী ভাবে বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েই ছিল বৈঠক। সেখানেই তিনি একাধিক পরামর্শ দিয়েছেন দলের জন্য। তাঁর পরামর্শ, বড় জনসভার বদলে ছোট ছোট অনেক সভা করার। এরপরেই মিঠুনের প্রশ্ন, তাঁর রোড শো ও সভায় ভিড় ভাল হয়েছিল। তবে ভোট বাক্সে কেন বিজেপি ২০০ পারের কথা বলেও ৭৭ আসনে আটকে গেল? কেন ব্যালট বক্সে দেখা গেল না বিজেপির প্রতি উচ্ছ্বাস? জয় হল জোড়াফুলের?
মিঠুনের এই সব প্রশ্নেই ক্ষোভ ঝরে পড়েছে বিজেপি শিবিরের একাংশের মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, মিঠুন চক্রবর্তী স্টার। তাই হয়েছিল ভিড়। মাঠে নেমে রাজনীতি তিনি বোঝেন না। নির্বাচনের আগে ‘জাত গোখরো’র সভায় ভিড় নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, স্টার অভিনেতাকে দেখতে জমেছে ভিড়। ভোট বাক্সে তার প্রতিফলন হবে না। তারপর বিজেপির রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিঠুনের একগুচ্ছ প্রশ্নে গেরুয়া শিবিরেই দেখা গিয়েছে ক্ষোভ। মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে গিয়ে কার্যত বিরোধী রাজনৈতিক দল্গুলির দাবিই এত মাস পর মেনে নিল বিজেপি শিবিরের একাংশ।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবারেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (CM) প্রসঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘আমি এখনও ওনাকে আমার বড় দিদির মতই সম্মান করি’। তারপরেই বলেছিলেন, ‘আমি জানি না উনি আমাকে ভাই ভাবেন কি না’। ‘প্রজাপতি’ শ্যুটিংয়ের ফাঁকে প্রশংসা করেছিলেন দেবেরও।
বিজেপি থেকে অবশ্য হতাশার প্রশ্ন ঢাকতে সুকান্ত মজুমদার (SUKANTA MAJUMDAR) বলেছেন, মিঠুন চক্রবর্তী পরমাণু। তা ঠিক সময় মত রাজনীতির শিবিরে চার্জ করা হবে। যেখানে সেখানে চার্জ করা হবে না। পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূল (TMC) শিবির থেকে মন্ত্রী (MINISTER) শশী পাঁজা (SASHI PANJA) বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (MAMATA BANERJEE) যাকে দাদা বলে রাজ্যসভা দিয়েছিলেন, তিনিই গদ্দারি করে বিজেপির হয়ে ছুরি মারতে গিয়েছেন। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (KUNAL GHOSH) বলেন, সিনেমার পর্দায় বড় নায়ক কিন্তু রাজনীতির ময়দানে ফ্লপ, রিজেক্টেড জলঢোঁড়া, বিশ্বাসঘাতক। তাঁর কটাক্ষ, আগে নকশাল করতেন তারপর ওঁ কোনও দলেই গুরুত্ব না পেয়ে মুম্বই আর সেখান ত্থেকে উটি। বলেন, ওঁর নামে কোনও কেস ছিল। কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাত থেকে বাঁচতেই বিজেপিতে গিয়েছেন।