নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: এইচএসসি (উচ্চ মাধ্যমিক) পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগ ঘিরে উত্তাল দেশ। মঙ্গলবার ওই সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারীর নাম প্রকাশ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) বোর্ড। অভিযুক্ত প্রশ্নকর্তার নাম প্রশান্ত কুমার পাল। তিনি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। ঘটনার পিছনে কারা-কারা জড়িত, ওই প্রশ্নপত্র তৈরির পিছনে বড়সড় কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা, তা খুঁজে বের করার জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত রবিবার ছিল উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ঘিরেই গত তিনদিন ধরে বিতর্কের ঝড় বয়ে চলেছে দেশজুড়ে। প্রশ্নপত্রের ১১ নম্বর প্রশ্নটি ছিল সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক। ওই প্রশ্নে বলা হয়, ‘নেপাল ও গোপাল দুই ভাই। জমি নিয়ে বিরোধ তাদের দীর্ঘদিন। অনেক সালিশ বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এখন জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির এক অংশ বিক্রি করে। আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কোরবানির ঈদে সে নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয়। এই ঘটনায় নেপালের মন ভেঙে যায়। কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায় সে।’
কীভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নে এমন সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন রাখা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষাবিদরা। চাপে পড়ে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় উল্লেখ করাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে আখ্যা দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া থাকে প্রশ্ন তৈরির ক্ষেত্রে অবশ্যই যেন সাম্প্রদায়িক কোনও কিছু না থাকে। এটা খুবই দুঃখজনক যে, কোনও একজন প্রশ্নকর্তা হয়তো এ প্রশ্নটি করেছেন, যিনি মডারেট করেছেন তার দৃষ্টিও হয়ত কোনও কারণে এড়িয়ে গিয়েছে।’