নিজস্ব প্রতিনিধি: পরীমণির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের ব্যবসায়ী নাসিরের। ২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তাঁর বন্ধু অমির, পাশাপাশি চারজনসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেছিলেন ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণি। এছাড়া ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর পরীমণির মামলার উপর ভিত্তি করে, সাভার থানার কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপরই শুরু হয় মামলা। এরপরই গত ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এবং এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তিনি ১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। যদিও তখন অভিযুক্তরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
কিন্তু পরীমণি প্রেগন্যান্সি অবস্থাতেই আদালতে উপস্থিত হয়ে, তাঁর সঙ্গে হওয়া যাবতীয় কাণ্ডগুলি আদালতে পেশ করেন। তবে এবার আদালতে পরীমণির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করলেন, অভিযুক্ত নাসির। প্রসঙ্গত, গত ৬ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ, পরীমণিসহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আজ ছিল পরীমণির জবানবন্দির দেওয়ার তারিখ। নাসিরের বক্তব্য অনুসারে এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন- পরীমনির সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিম।
মামলায় নাসিরউদ্দিন বলেন, পরীমণি ও তাঁর সহযোগীরা খুবই অ্যালকোহল সেবন করেন। তাঁরা প্রায়শই বিভিন্ন নামীদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করতেন। এমনকী জিনিস কিনে সেই মূল্যও পরিশোধ করেন না। আর পরীমণি তাঁর সেলিব্রিটি মানসিকতা কাজে লাগিয়ে তাঁর পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের ভয় দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে। সঙ্গে তিনি এও উল্লেখ করেন যে, ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে ওয়াশরুম ব্যবহার করে, ক্লাবের ভেতরে বসে মদ খান। এমনকী তিনি জানান, নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তাঁর সহযোগী শাহ শহিদুল আলম সেদিন রাত ১টা ১৫ মিনিটে যখন ক্লাব থেকে চলে গিয়েছিলেন। তখন পরীমনি নাসিরকে ডাক দিয়ে, তাঁদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। এমনকী একটি পর্যায়ে পরীমণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে কেনার চাপ দেন।
আর নাসির এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাঁকে উল্টোবাল্টা ভাষায় গালমন্দ করতে শুরু করেন। এরপরেই তাঁদের বাদানুবাদ হয়, এবং পরীমণি নাসিরের দিকে মদের গ্লাস ও মোবাইলে ফোন ছুঁড়ে মারেন, যাতে নাসির আহত হন। এরপরই পরীমণি ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেন। পাশাপাশি বোট ক্লাবে ভাঙচুর করেন। আর এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্যেই পরীমণি সাভার থানায় নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন। সেই কারণেই হত্যাচেষ্টা, মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নাসির। যদিও এই প্রসঙ্গে আজ অর্থাৎ সোমবার ১৮ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসান পুলিশের অপরাধ দমন শাখাকে (সিআইডি) এই সম্বন্ধে যাবতীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ৬ অক্টোবর এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।