নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: রঙের উৎসবের পরের দিন শনিবার সকালেই দুঃসংবাদ। দীর্ঘ অসুস্থতার পরে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন দেশে গণতন্ত্র ফেরানোর অন্যতম কুশীলব তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা দেশের(Bangladesh) প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ(Sahabuddin Ahamad)। চিকিৎসকদের যাবতীয় লড়াইকে ব্যর্থ করে দিয়ে এদিন সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি(Ex-President) তথা অজাতশত্রু সাহাবুদ্দিনের মৃত্যুর খবরে গোটা দেশেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব।
নব্বইয়ের দশকে গণ আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাঁর পরিবর্তে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানের দায়িত্ব বর্তেছিল সাহাবুদ্দিন আহমদের উপরে। দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন। ওই নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করেছিল খালেদা জিয়ার বিএনপি। পাঁচ বছর বাদে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাঁকে রাষ্ট্রপতি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পেমই গ্রামে জন্ম সাহাবুদ্দিন আহমদের। ১৯৪৫ সালে নান্দাইলের চন্ডীপাশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৪৮ সালে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ থেকে আইএ পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫১ সালে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৫২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৪ সালে তদানীন্তন পাকিস্তানি সিভিল সার্ভিসের (সিএসপি) প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি প্রথমে লাহোরের সিভিল সার্ভিস আকাদেমি এবং পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জনপ্রশাসনে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬০ সালে তিনি প্রশাসন হতে বিচার বিভাগে বদলি হন। ১৯৬৭ সালে তাকে ঢাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীনের পরে ১৯৭২ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্টের বেঞ্চে বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।