নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: দেশজুড়ে হিন্দু সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলায় শেখ হাসিনা প্রশাসনকেই নিশানা করলেন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সঙ্ঘের (ইসকন) বাংলাদেশ শাখার পদাধিকারীরা। বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ইসকনের বাংলাদেশ শাখার সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সুষ্ঠ বিচার না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, নিপীড়ন ও হামলা চলছে।’
গত বছর দুর্গাপুজোর সময়ে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম সহ একাধিক জায়গায় হিন্দুদের মন্দির ও দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ভাঙচুর চলেছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে দোলের আগের দিন রাতে রাজধানী ঢাকার ইসকন মন্দিরে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। গত ২১ মার্চ খিলগাঁও, তিলপাড়া মন্দিরেও প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। আর একের পর এক মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে যেমন আতঙ্ক ছরিয়েছে, তেমনই ক্ষোভ জন্মেছে।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন ইসকন বাংলাদেশ শাখার সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হয়নি। গত কয়েক মাস আগেও দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক চরম সহিংসতার, বিশেষত কুমিল্লা ও নোয়াখালির ঘটনারও কোনও বিচার হয়নি। শুধু আশ্বাসবাণী শোনা গিয়েছিল। দেশের সরকার ও বিভিন্ন মন্ত্রী ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও মন্দির পুনঃনির্মাণের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারও কোনও বাস্তবায়ন হয়নি। যদি প্রথম থেকেই এ ধরণের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতো তাহলে মন্দির ভাঙচুরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হত না।’ গত ১৭ মার্চ দোলের আগের রাতে রাধাকান্ত জিউ ইসকন মন্দিরে হামলার ঘটনায় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন ইসকন বাংলাদেশ শাখার সভাপতি।
সাংবাদিক সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র দেবনাথ ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর থেকে হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর যে অত্যচার দেখছি তা অত্যন্ত কষ্টকর। যারা হিন্দুদের উপর আঘাত করছে, তারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের উপরেই আঘাত করছে। হিন্দু সম্প্রদায়কে রক্ষায় ২০১৮ সালে ভোটের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইস্তেহার বাস্তবায়িত করতে হবে।’