নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারতের অন্যতম কালীতীর্থ কালীঘাট, অথচ কালীপুজোর দিন সেখানে হয় লক্ষ্মীপুজো! অবাক হওয়ার মতোই ঘটনা। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সমস্ত শক্তিপীঠে কালী বা শক্তির আরাধনা হলেও কালীঘাট এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এখানে হয় লক্ষ্মীর আরাধনা। সন্ধ্যা নামতেই মন্দিরের চারদিকে সাত পাক ঘোরার পরে একটি খড়ের পুতুলে আগুন ধরিয়ে দূর করা হয় অলক্ষ্মীকে। অলক্ষ্মী বিদায়ের পর গোটা মন্দির ধোয়া হয় গঙ্গাজল দিয়ে। এরপর শুরু হয় লক্ষ্মীপুজো। এটাই কালীঘাটের রীতি। দক্ষিণা কালীকেই মহালক্ষ্মী রূপে পুজো করা হয় দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে। কিন্তু কেন এই অদ্ভূত রীতি? এর উত্তর জানতে হলে ঘাঁটতে হবে বিস্তর ইতিহাস।
জানা যায়, বর্তমান কালীঘাট মন্দির তৈরি করিয়েছিলেন সাবর্ণ রায়চৌধুরীর পরিবার। পরবর্তীকালে তাঁদের আত্মীয় গঙ্গাপ্রসাদ চক্রবর্তীকে মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব দেন। এই গঙ্গাপ্রসাদ ছিলেন আবার পরম বৈষ্ণব। কথিত আছে, গঙ্গাপ্রসাদই কালীপুজোর রাতে ধনলক্ষ্মী বা মহালক্ষ্মীর পুজো শুরু করছিলেন কালীঘাটে। আর লক্ষ্মীপুজো যেহেতু সন্ধ্যেবেলার পুজো। তাই সেসময় কালীকে মহালক্ষ্মী রূপে পুজো করা হয়। পুজোর ভোগে থাকে খই, নাড়ু, মুড়কী, মিষ্টি, ফল, লুচি ও নানারকম তরকারি। পাশাপাশি খিচুড়ি, পোলাও, মাছ এবং পরমান্ন ভোগ দেওয়া হয়। তবে এদিন সকাল থেকে মা কালীর পুজো যথারীতি হয় নিয়ম মেনে। সকালে নিত্যপুজোর ফল প্রসাদ, নৈবেদ্য হিসেবে আতপ চাল। দুপুরেও রোজের মতো মায়ের ভোগে থাকে শুক্তো, পাঁচ রকম ভাজা, সাদা ভাত, মাছের কালিয়া, পাঁঠার মাংস, পোলাও এবং পায়েস।