নিজস্ব প্রতিনিধি: অনেকেই ভাবেন ‘নাগা’ মানে ‘ন্যাংটো’ বা উলঙ্গ। তা কিন্তু নয়, নাগা মানে বিশ্বের প্রকৃত সত্য অনুসন্ধানকারী। অন্যান্য সাধুসন্তদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এঁরা। জানেন, নাগাসন্ন্যাসীদের জীবনযাপন কেমন? কী ভাবে হয় নাগা সন্ন্যাসী? গঙ্গাসাগর (GANGA SAGAR) মেলার সময়ে জেনে নিন সেই কথা…
পুরাণ মতে, ভগবান দত্তাত্রেয় ত্রেতা যুগে ধর্ম রক্ষায় শুরু করেছিলেন নাগা সন্ন্যাসী বা সন্ন্যাসী যোদ্ধার। এঁরা ধর্ম রক্ষক। নাগা সন্ন্যাসীরা সমস্ত বন্ধনমুক্ত। ‘কাম’কে এঁরা বিসর্জন দেন দীক্ষা নেওয়ার শুরুতেই। তিতিক্ষা, ত্যাগ, কৃচ্ছ্রসাধন’ই তাঁদের জীবন ও সাধনার পথ। পূণ্যস্নানের তিথিতে তাঁরা প্রথমে নিজেদের ইষ্টদেবতাকে স্নান করান। তারপরে নিজেদের ত্রিশূল, বর্শা, লাঠি, কুঠারকে স্নান করান। এরপর নিজেরা ডুব দেন জলে।
শুধু পুরুষরাই ‘নাগা’ হন না। নাগা সন্ন্যাসী হন মহিলারাও। তাঁদের উলঙ্গ হতে হয় না। গায়ে থাকে সেলাইহীন বস্ত্র। এছাড়াও ‘বালনাগা’ হয়। জন্মের পর তার পরিবার সন্তানকে রেখে আসে নাগা সন্ন্যাসীদের কাছে। সন্ন্যাসীদের কাছেই বেড়ে ওঠে সন্তান। শেখে জীবন ধারণ, অস্ত্রশিক্ষা। সব সাধনায় উত্তীর্ণ হলে তবেই মেলে দীক্ষা।
নাগা সন্ন্যাসী প্রথমে চাইলেই হওয়া যায় না। ৬ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত করতে হয় কঠোর সাধনা। এরপর কেটে ফেলতে হয় চুল। তারপর ১০৮ বার গঙ্গাস্নান করতে হয়। এরপরেই শুরু হয় পাঁচজন গুরুর অধীনে শিক্ষা। নিজেকেই করতে হয় নিজের পিণ্ডদান এবং তর্পণ। তারপর প্রবেশ ‘আখড়া’ জীবনে। সেখানেই দেওয়া হয় গুরুমন্ত্র। আর সেই মন্ত্রকে সত্য বিশ্বাসে আজীবন চলে সাধনা। পুরুষ নাগাসন্ন্যাসীদের ‘সন্ন্যাসী’ জীবনের শুরুতেই ত্যাগ করতে হয় সমস্ত বস্ত্র। তবে চাইলে বিশেষ উপায়ে সামান্য বস্ত্র ধারণ করতে পারেন।
তেল-সাবান তাঁদের কাছে বর্জনীয়। তাঁদের গায়ে মাখা থাকে ভস্ম। এই ভস্ম কিন্তু শুধু ছাই নয়, তাতে মেশানো হয় গোবর, দুধ, কলা ও বেলপাতা।