-273ºc,
Friday, 2nd June, 2023 3:22 am
ঝাড়গ্রামের পুজো মানেই অন্যরকম। ঝড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে সুবর্ণরেখা নদীর তীরে দেবী দুর্গা (DURGA) রূপে পুজো করা হয় কচু গাছকে। নদীকে তুষ্ট রাখতেই পুজো। কেউ এই পুজোকে বলেন, নদী ষষ্ঠী। আবার কেউ বা বলেন, ঝিঙে ষষ্ঠী। এখানের প্রসাদও কিন্তু অন্য।
দেবী তো প্রকৃতিই। সেই দেবীকে আরাধনা করা হয় মা রূপে। ‘মা নদী’। নদী কখনও শান্ত আবার কখনও ভয়ংকরী। তাই মা’কে তুষ্ট রাখতে করা হয় আরাধনা। তবে এই পুজোয় পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ। আসতে পারেন কেবল মহিলারা। এখানে পুরোহিতও নারী।
নদীকে পুজো করা হয় বলে নাম ‘নদী ষষ্ঠী’। তবে ‘ঝিঙে ষষ্ঠী’ নাম কেন? শোনা যায়, ১১২৫ বঙ্গাব্দে সুবর্ণরেখা উত্তাল হয়ে উঠেছিল এখানে। ভেসে গিয়েছিল শিশু, জমি, ঘর। প্রাণ বেঁচেছিল তাঁদের যারা ঝিঙে গাছের লতা আঁকড়ে ধরে ছিলেন। তারপর থেকে নদীকে তুষ্ট রাখতে হয় এই পুজো। যেহেতু ঝিঙে গাছে প্রাণ বেঁচেছিল, তাই এই পুজোর নাম ঝিঙে ষষ্ঠী। এখানে কচু গাছকে পুজো করা হয় দেবী রূপে। আর প্রসাদ মূলত ঝিঙে। এছাড়াও থাকে বিভিন্ন আনাজ এবং ফল। পুজো সমাপ্ত হলে সুবর্ণরেখায় ঝিঙে ভাসিয়ে দেওয়ার রীতি।
শারদোৎসবের একমাস আগে ভাদ্র মাসে হয় এই পুজো। পুরাণ অনুযায়ী, মায়া থেকেই সমস্ত কিছুর সৃষ্টি। আর মায়ার উৎস মহামায়া। তিনিই দশভূজা। তাই সৃষ্টি রক্ষার আবেদন জানিয়েই দেবীর আরাধনা। পুরাণ অনুযায়ী, দুর্গমাসুরের তাণ্ডবে মর্ত্যে যখন খরা। তখন ভক্তগণের আর্তিতে দেবী প্রকট হয়েছিলেন পার্বতী রূপে। সকলের দুর্দশা দেখে তাঁর চোখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছিল অশ্রু। তা ঝরে পড়েছিল বৃষ্টি রূপে। তখন খাদ্য নেই মর্ত্যে। দেবী নিজের শরীর থেকে উৎপন্ন করছিলেন সবজি ও ফল। তাই দেবীর নাম শাকম্ভরী। এখানে পুরাণ ও স্থানীয় লোকবিশ্বাস মিশে প্রচলন হয়েছে অন্য ধরনের পুজোর।
– নিসর্গ নির্যাস