প্রতিটা অলি-গলিতে বা মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিপ্লব যদি থেকে থাকে তবে তা মেদিনীপুরে (MEDINIPUR)। রাজনীতি হোক বা অরাজনৈতিক আন্দোলন, পথ দেখায় আমার মেদিনীপুর।
সময়টা ১৯৩৪। ইংরেজরা (BRITISH) ভয় পেয়েছে। ভয় পেয়ে অত্যাচারী হয়েছে আরও। বার্জ-পেডি-ডগলাসের কবরে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছোবল মেরে চলেছে। ইংরেজরা রাজশক্তি হারাবার ভয়ে জারি করেছে সান্ধ্য আইন। তল্লাশির নামে চলছে নৃশংস অত্যাচার,ধরপাকড়। মেদিনীপুরের ওপর প্রায় ৬৮ হাজার টাকার করের বোঝা চাপানো হয়েছে। শহরে-পাড়ায়-বাড়িতে নিষিদ্ধ উৎসব- অনুষ্ঠান।
দমেনি বিপ্লব, বিপ্লবী কার্যকলাপ। নতুন ছক কষা শুরু হল। আগুনের গোলা বিমল দাশগুপ্ত, বীরেন্দ্র শাসমল, খান রাজ বংশের দেবেন্দ্রলাল খান তাঁদের বিপ্লবী বন্ধুদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন বিপ্লবী কার্যকলাপ সুচারু ভাবে করতে হবে। বাঙালির মিলনের উৎসবে রাজশক্তি বাধা দিতে হিমশিম খাবে। পুজোর আড়ালে চলবে বৈপ্লবিক কাজ। পুঁজি বলতে জনগনের দেশপ্রেম। প্রকাশ্যে শহরের কর্ণেলগোলায়, ব্রাহ্ম সমাজের ফাঁকা জায়গায় দেবী আরাধনা হবে। নিমরাজি মত মিলল ইংরেজ সরকারের। দেবীর আরাধনা। ভারতমাতার মুক্তির সাধনা। সেই সাজপোষাকে বিদেশীপণ্য অস্পৃশ্য। মত হলো,মায়ের শাড়ি থেকে গয়না সবই হবে মাটির তৈরি।
পুজো শুরু হল। সেই সঙ্গে আনুষঙ্গিক অনুষ্ঠান হিসেবে শুরু হল যুবকদের দেহ-কসরতের আসর। গোপনে সেই কসরতের ফাঁকেই স্বাধীনতা আন্দোলনে দিক্ষীত হচ্ছে যুব সম্প্রদায়। জোগানো হচ্ছে মনোবল। শরীর সুঠাম রাখতে, পরিশ্রমী হতে, দেহ চর্চা জারি রাখার কথা বলা হচ্ছে। জোগান দেওয়া হচ্ছে মনোবল।
বিপ্লবীরা অভয় দিয়ে বলছে, ভারতমাতার (INDIA) শেষ শেকলটুকু ভাঙার অপেক্ষা। আমরা আছি। তোমরা এসো। সাদা চামড়ার ইংরেজদের কালো হাত ভাঙছে দেখো একটু একটু করে…
মেদিনীপুর শহরের কর্ণেলগোলা আদি সর্বজনীন দুর্গোৎসবে আজও দেবী সাজেন মাটির কাপড়, গয়নায়। এখনও চলে দেহ সৌষ্ঠব আসর।
আমার বিপ্লবের মেদিনীপুর নয়?
– নিসর্গ নির্যাস মাহাতো