নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলা নিয়ে আগামী সোমবারই শুনানি হচ্ছে দেশের শীর্ষ আদালতে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে হবে মামলার শুনানি। বেলা বারোটা থেকে শুনানি শুরুর কথা রয়েছে। শনিবার সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই শুনানির দিকেই হা-পিত্যেশ নয়নে তাকিয়ে চাকরি হারা শিক্ষক থেকে শুরু করে তাদের পরিবারের সদস্যরা।
গত সোমবারই স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় রায় দিতে গিয়ে ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির রায়ে একসঙ্গে চাকরি হারান ২৫,৭৫৩ জন। তার মধ্যে যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয়। ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ায় শুধুমাত্র চাকরি বেঁচে গিয়েছে বীরভূমের সোমা দাসের। প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বদান্যতায় যিনি চাকরি পেয়েছিলেন।
কলকাতা হাইকোর্টের ওই রায় নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। হাই কোর্টের এই রায়ের খবর প্রকাশ্যে আসতে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে চাকরিহারাদের মধ্যে। তাঁদেরও প্রশ্ন, কয়েক জনের দুর্নীতির জন্য সকলের চাকরি কেন বাতিল করা হবে? বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরাও। রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়ে দেন, চাকরিহারা শিক্ষকদের পাশে থাকছে রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে যাবে রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক প্রবীণ আইনজীবীও ওই রায় নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। অরুণাভ ঘোষের মতো আইনজীবীরা জানিয়ে দেন, কলকাতা হাইকোর্টের রায় শীর্ষ আদালতে ধোঁপে টিকবে না। গত বুধবারই এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্য সরকারের তরফে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। সেই সঙ্গে শিক্ষা দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, এপ্রিল মাসের বেতন পাবেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের বেতন দেওয়া হবে।