এই মুহূর্তে

শব্দে শব্দে শঙ্খ- নিনাদ

কবি- গবেষক- প্রাবন্ধিক- ঔপন্যাসিক- সমালোচক শঙ্খ ঘোষ আজীবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন অবলীলায়। চুপ থাকতে পারেননি প্রতিবাদ থেকে। বারবার গর্জে উঠেছেন তিনি- তাঁর কলম, শঙ্খ নিনাদ। আজকের দিনেই গত বছর অমৃতলোক যাত্রা করেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ।

১৯৫২। কোচবিহার খাদ্য আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে বালিকার মৃত্যুতে লিখলেন, ‘নিভন্ত এই চুল্লিতে মা একটু আগুন দে…’।

জরুরি অবস্থার সময় তাঁকে কবিতা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন দেশ পত্রিকার তৎকালীন  সম্পাদক সাগরময় ঘোষ। পরে জানা যায়, সেই কবিতা প্রকাশিত হচ্ছে না। বিরোধী মতের কবিতা ছাপানো যাবে না। অন্য কবিতা দিতে বলা হয়েছিল কবিকে। না সেই বছর তিনি আর কবিতা দেননি। শঙ্খ ঘোষ নিজেই জানিয়েছিলেন, আকাশবাণীতে কাজ করার সময় বারবার দফতরকে পড়তে হয়েছিল নজরদারিতে। তবে সেখানেও আদর্শ থেকে সরে আসেননি শঙ্খ।

তীব্র কণ্ঠরোধের মাঝে দাঁড়িয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘তোমারই সেন্ট্রাল জেলে,

তোমারই কার্জন পার্কে।’

নন্দীগ্রামের ঘটনায় কবি লিখেছিলেন, তিন রাউন্ড গুলি খেয়ে…পুলিশ কখনো কোনো অন্যায় করে না তারা যতক্ষণ আমার পুলিশ’‌

শঙ্খ ঘোষ বরাবরই গর্জে উঠেছেন ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে। তাই  কংগ্রেস-বাম- তৃণমূল কোনও সরকারের আমলেই সরে আসেননি প্রতিবাদ থেকে।

শিলাদিত্যকে যখন মাওবাদী বলে দাগিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শঙ্খ লিখলেন, ‘এখনও তুমি প্রতিবাদ করো‌। মাওবাদী?’

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ‘রাস্তায় রাস্তায় উন্নয়ন’- এর প্রসঙ্গে কবি লিখেছেন, ‘দেখ খুলে তোর ত্রি-নয়ন, রাজ্য জুড়ে খড়গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’। অনুব্রত অবশ্য বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ- নজরুল’কে কবি। এনাকে জানেন না। রবীন্দ্রনাথ- নজরুল পরবর্তী সময়ে কবি ও কবিতা নিয়ে অনুব্রতের জ্ঞান নেই, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। কবির মৃত্যুর পর তিনি অবশ্য বলেছিলেন, শঙ্খ ঘোষ ভালো কবি ছিলেন।

প্রাপ্তি- অপ্রাপ্তি- গুণগানের আশা থাকতে নেই কবির। শঙ্খ ঘোষের-ও ছিল না।

গুজরাট দাঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি লিখেছিলেন, ‘নারায়ণ নয়, আমি পেয়ে গেছি নারায়ণী সেনা…’ । আরওয়াল গণহত্যা প্রসঙ্গে কবির কলমে ফুটে উঠল, ‘ওদের ব্রহ্মর্ষি সেনা, ওদের চক্রের ব্যূহ ঘেরা

ওদের রাইফেলে গুলি ওদের পুলিশ সুপারেরা’।

বাম মানে ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়। বামপন্থায় আদর্শ লেনিন। আর শিব, সেতো দেবাদিদেব। শঙ্খ লিখেছিলেন, ‘বাইরে লেনিন ‌ ভিতরে শিব, বেলেঘাটার গলি’। আপাত খুব সহজ এই বাক্য কিন্তু কোনও ঠিকানা বোঝাতে গিয়ে সহজভাবে সমাজের কী অদ্ভুত দ্বিচারিতা তুলে ধরেছেন তিনি!

আর সম্প্রদায় প্রসঙ্গে হিন্দু- মুসলিম নয়, খুব সহজভাবে সমাজের চরম সত্যিটা তুলে ধরেছিলেন তিনি। লিখেছেন, হাওড়া ব্রিজের চুড়োয় উঠুন/নিচে তাকান, ঊর্ধ্বে চান/

দুটোই মাত্র সম্প্রদায়/নির্বোধ আর বুদ্ধিমান’।

কবি? সেতো মহা দ্রষ্টা মহা জ্ঞানী। তিনি আগেই বুঝে গিয়েছিলেন থেমে যাবে এই প্রতিবাদ মুখর কলম? তাই কি লিখেছিলেন?

‘এত বেশি কথা বলো কেন? চুপ করো

শব্দহীন হও।’

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

গন ভাইফোঁটার পরিকল্পনা নিয়েছে বসিরহাটের ‘নবোদয় সংঘ’

বনগাঁ থানার এবারের কালীপুজোর থিম ‘ কৈলাস পর্বতে মহাদেব’

বাঁকুড়ার সাঁতরা বাড়ির “বড় বৌমা” পূজিত হলেন মা কালীর রূপে

নৈহাটির বড়মার পুজোয় ভক্তদের ভিড়

তারাপীঠে সারারাত খোলা থাকছে গর্ভ গৃহের দরজা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন উপবাস, নিজের হাতে রান্না করলেন ভোগ

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর