নিজস্ব প্রতিনিধি: সংবাদমাধ্যম, গোটা বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী স্তম্ভ। যার মাধ্যমে দেশ-বিদেশের সমস্ত আপডেট মুহূর্তেই চলে আসে আপনার নাগালে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জমানায় ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও তলানিতে ঠেকেছে। এদিকে মোদি দিন কয়েক আগেই দাবি করেছেন, ‘সংবাদ মাধ্যম নিরপেক্ষ নয়, তাই সাংবাদিক বৈঠক করি না’! যে বক্তব্যটি এখন নেটপাড়ায় রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। বর্তমানে নেটমহলের অন্যতম ভাইরাল টপিক এটি। তিনি বরবারই দেশের অগ্রগতি নিয়ে ভেবেছেন, কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা পাকিস্তানের থেকেও কম। সম্প্রতি এমনই একটি ভয়ানক তথ্য দিল রিপোর্ট। টানা ১০ বছর মোদির রাজত্বে সংবাদমাধ্যমের মান ক্রমশ দুর্বল হয়েছে, বলছে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট। যেখানে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মোদীর জমানায় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বহুলাংশে খর্ব করা হয়েছে। কারণ কেন্দ্রবিরোধী বা শাসকদল বিরোধী খবরে মাঝে মধ্যেই পড়েছে কাঁচি। আর তাঁর দায়ভার বর্তায় কাঁচি চালিয়েছে মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির কাঁধে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদি বিভাজনবাদী। কারণ পদে বসার পর থেকে তিনি কোনও সাংবাদিক সম্মেলনও করেননি। বরং বিরোধী স্বর শোনা গেলেই সাংবাদিকদের দেশদ্রোহী, সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়া হত। এমনকি গ্রেফতারও হয়েছেন প্রচুর সাংবাদিক। যার মধ্যে অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা প্রবীর পুরকায়স্থের গ্রেফতারির বিষয়টি জড়িত। তিনি এখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বেকসুর খালাস। সমীক্ষার রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার মাপকাঠিতে ১৮০ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১৬১ নম্বরে। আর এই অবনতি মোদির শাসনকালেই। তালিকায় ভারতের আগে রয়েছে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান। শুধু বাংলাদেশ রয়েছে ভারতের পিছনে রয়েছে। সম্প্রতি একটি সাক্ষাতকারে মোদির দাবি ছিল,’ সাংবাদিকদের নিজস্ব পছন্দ আছে। সেই পছন্দের জন্যই তাঁরা পরিচিত।
সংবাদমাধ্যম আর নিরপেক্ষ নেই। আমি কঠোর পরিশ্রমী। সেটাই আমার লক্ষ্য। গরিব মানুষের বাড়ি যেতে চাই। চাইলে আমি ফিতে কাটতে এবং আমার ছবি তোলাতে পারি, কিন্তু করি না। সংবাদমাধ্যমের চরিত্র বদলে গিয়েছে। আগের সেই নিরপেক্ষ সত্ত্বা আর নেই। সাংবাদিকরা এখন নিজেদের মত আর আদর্শ প্রচারে ব্যস্ত।’ আর মোদির এই মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেশের একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন মন্তব্য শুনতে কেউই অভ্যস্ত নন। এমনকি গত ১০ বছর তাঁর রাজত্বে একটিও সাংবাদিক বৈঠক করতে দেখা যায়নি তাঁকে। তাতেই বিতর্ক তুঙ্গে।