নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ‘প্রভুভক্তি’ কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে তা ফের দেখাচ্ছেন দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। বিজেপির দয়ায় অবসরের পরে নির্বাচন কমিশনের পদ পাওয়া প্রাক্তন আমলা কার্যত বিজেপির কাছে শিরদাঁড়া বন্ধক রেখেছেন বলে অভিযোগ করে চলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের সেই অভিযোগের যে যথেষ্টই সারবত্তা রয়েছে তার প্রমাণ মিলছে লোকসভা ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা না হওয়ায়।
পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের ১০ মার্চ দেশের সাধারণ নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফার ভোট হয়েছিল ১১ এপ্রিল। অর্থাৎ ভোট ঘোষণার ৩১ দিন বাদে ভোট হয়েছিল। সূত্রের খবর, এবারেও ১০ মার্চের মধ্যে ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণার কথা ভেবেছিলেন নির্বাচন কমিশনের সিংহভাগ আধিকারিকরা। কিন্তু ‘প্রভু’ মোদির কার্যালয় থেকে সবুজ সঙ্কেত না পাওয়ায় ওই নির্ঘন্ট ঘোষণা আটকে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যাতে ভোটে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ড তুলতে বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি প্রকল্পের পাথর পোঁতার কাজ করে হাততালি কুড়োতে পারেন, সেই সুযোগ করে দিচ্ছেন খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার তথা আমলা মহলের মোদির ‘মানসপুত্র’ হিসাবে পরিচিত রাজীব কুমার। এবারই প্রথম নয়। ২০২২ সালেও বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিতে মোদির রাজ্য গুজরাতে বিধানসভা ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা নিয়ে টালবাহানা করার অভিযোগ উঠেছিল ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে।
যাতে ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণার বিলম্ব নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ না তুলতে পারে তার জন্য বেশ কিছু কৌশলও নিয়েছেন ‘বিজেপি বান্ধব’ হিসাবে পরিচিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আগামী ১১ মার্চ দেশের সব কয়েকটি নির্বাচনী কেন্দ্র মিলিয়ে মোট দু’হাজার পর্যবেক্ষকের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে কমিশন। ওই বৈঠকের পরে আগামী ১২ ও ১৩ মার্চ জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচনী প্রস্তুতি দেখতে দেখতে যাচ্ছে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। ১৩ মার্চই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকেই সিএএ চালুর বিষয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। তাছাড়া ভোটারদের উপঢৌকন হিসাবে আরও বেশ কয়েকটি জনমোহিনী ঘোষণা করা হবে। সেক্ষেত্রে ১৪ কিংবা ১৫ মার্চ ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণার পথে যেতে পারে কমিশন। নববর্ষের উৎসব শেষেই প্রথম দফার ভোট হতে পারে।